নির্ধারিত মূল্যেরও কমে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস
৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৬
ঢাকা: রাজধানীর বাজারে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রির যে সিদ্ধান্ত তা দ্বিতীয় দিনও কার্যকর হতে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও কম দামে বিক্রি হচ্ছে। যদিও সেই মাংসে হাড় ও চর্বির পরিমাণ বেশি দেওয়া হয়।
বিক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ী সমিতির বেঁধে দেওয়া মূল্যে বিক্রি করে লাভ কম হলেও বিক্রি বেশি হচ্ছে। এদিকে, মাংসের দাম কমায় ক্রেতারা বেজায় খুশি।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজার, শ্যামলী, কল্যাণপুর ও মোহাম্মদপুরের কৃষি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীতে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এটা আগামী এক মাস, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই দামে মাংস বিক্রি করবেন তারা।
মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনের পর দাম আবার সমন্বয় করা হবে। প্রাথমিকভাবে রাজধানীতে এ দর বাস্তবায়ন হবে। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে সারাদেশে।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মাংস উৎপাদন ও বিপণনে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) এবং মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
মাংস ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম হবে ৬৫০ টাকা। এতে ৭৫০ গ্রাম মাংস, ২০০ গ্রাম হাড় ও ৫০ গ্রাম চর্বি থাকবে। এছাড়া মানহীন বা রিজেক্ট মাংস বিক্রি করা যাবে না। এক মাস পরীক্ষামূলকভাবে বিক্রির পর আবার মূল্য সমন্বয় করা হবে।
রাজধানীর কৃষি বাজার গরুর মাংস ৬৪০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে শ্যামলীর কাঁচা বাজার গরুর মাংস ৬০০-৬৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি বাজারের গরুর মাংসের দোকানে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায়। সেখানে বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুস সালামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মাস গরুর মাংস কেনা হয়নি। দাম কমেছে শুনে বাজারে এসেছি। গরুর মাংসের মতো অন্যান্য পণ্যের দাম কমলে আমাদের জন্য ভালোই হতো।
গরুর মাংস কিনতে আসা কবির হোসেন নামের এক প্রবীণ ব্যক্তি সারাবাংলাকে বলেন, সরকার গরুর মাংসের পাশাপাশি সব ধরনের পণ্যের দাম এভাবে নির্ধারণ করে দিলে সবার জন্য ভালো হতো। যখন ৭৫০-৮০০ কেজি ছিল তখন গরুর মাংস কম খাওয়া হতো। এখন দাম কমানোর কারণে সবার পক্ষেই গরুর মাংস কেনা কিছুটা সাশ্রয়ী হবে।
কথা হলো রফিক কোরাইসি মাংস বিতানের বিক্রেতা মুন্না মিয়ার সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত ৬৫০ টাকা কেজি দরেই গরুর মাংস বিক্রি করছি। দাম কমায় আজকে ক্রেতা সমাগম অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি।
কৃষি বাজারে খাসির মাংস ১০০-১০৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। শ্যামলীর কাঁচা বাজারে ৬০০-৬২০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়।
গরুর মাংস বিক্রেতা তৌফিক মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কম দামে আমরা গরুর মাংস বিক্রি করছি। যদিও এতে আমাদের লাভ কম হচ্ছে।
একই বাজারে খাসির মাংস বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, গরুর মাংসের দাম কমলেও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই আছে। খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
শ্যামলীর ২ নম্বর সড়কের টুটুল মাংস বিতানের বিক্রেতা টুটুল মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করছি। আজ সরকার ও ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬৫০ টাকা কেজি দরেই গরুর মাংস বিক্রি করছি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ