‘জেন্ডার সমস্যা সমাধানে ছেলেদের দিকে নজর দিতে হবে’
৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:১৩
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে বলে দাবি করতে পারি। এখন জেন্ডার সমস্যার সমাধান করতে হলে ছেলেদের দিকে নজর দিতে হবে, মেয়েদের না। মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট নারী ও তাদের স্বজনদের হাতে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে তিনি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
সরকারের টানা মেয়াদে নারী শিক্ষার অগ্রগতিসহ নারী সমাজের নানা উন্নয়নের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতার পর মেয়েদের যে অধিকার সুনিশ্চিত করেছিলেন। সেই পথ ধরেই আমরা কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেন্ডার সমস্যা নিয়ে কথা আসে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ছেলেদের থেকে মেয়েরা বেশি পাস করেছে। এখন আমাদের জেন্ডার সমতা আনতে হলে ছেলেরা যাতে বেশি পাস করে বা সমান থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে নজর দিতে হবে। মেয়েরা কিন্তু এখন পরীক্ষায় ভালো করে।’
‘এখন জেন্ডার সমস্যার সমাধান করতে হলে ছেলেদের দিকে নজর দিতে হবে, মেয়েদের না। মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। এই কথা বলে আবার ভোট হারাবো কি না তাও ভাবতে হবে?’- বলে হেসে দেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ বাংলাদেশ করতে পেরেছে। অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি। বাধা এসেছে, কিন্তু তিনি (বেগম রোকেয়া) দমে যাননি। তার সাহসী ভূমিকা সব সময় স্মরণ করি।’
বেগম রোকেয়ার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দিনে আমার মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুলেরও জন্মদিন। তার জন্য আপনারা একটু দোয়া করবেন।’
নারীকে প্রধান বিচারপতি করতে না পারার আক্ষেপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইনমন্ত্রীকে বলেছিলাম, হাইকোর্টে নারী বিচারকের নাম যদি না থাকে, তাহলে কখনো ওই ফাইল সই করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। এছাড়া আমার একটা আফসোস রয়ে গেছে। আমার খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে চিফ জাস্টিস করে যাব। মাথায় ছিল নাজমুন আরা। কিন্তু আমারা এতো বেশি কনজারভেটিভ যে, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সেজন্য তখন চিফ জাস্টিস করতে পারিনি। এ আফসোসটা থেকে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশে কিন্তু নারী প্রেসিডেন্ট হতে পারেনি, কনটেস্ট করে হেরে যায়। আর ইসলামি সহযোগিতা সংস্থায় (ওআইসি) আমিই একমাত্র নারী সরকারপ্রধান। সেখানে অনেক ‘ব্রাদারের’ মাঝে আমি ‘অনলি সিস্টার’।”
এর আগে, সমাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য পাঁচজন বিশিষ্ট নারীর হাতে ‘রোকেয়া পদক-২০২৩’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদকপ্রাপ্তরা হলেন— নারী শিক্ষায় অবদান রাখায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম (মরণোত্তর), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ডা. হালিদা হানুম আখতার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা (মরণোত্তর), নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার ও পল্লী উন্নয়নে রনিতা বালা।
পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম সোনা দিয়ে নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
সারাবাংলা/এনআর/এনএস