২ বছরের শিশুটিকে আছড়ে ফেলে হত্যা
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে দুই বছরের এক শিশুকে আছড়ে ফেলে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার ওই তরুণ শিশুটির মায়ের ‘তৃতীয়’ স্বামী। মাকে বিয়ে করলেও আগের সংসারের ছেলেকে সহ্য করতে পারতেন না তিনি। মায়ের অগোচরে শিশুটিকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করতেন শিশুটিকে। একপর্যায়ে তাকে দেয়ালে আছড়ে মেরে ফেলেন।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকা থেকে ওই তরুণকে গ্রেফতার করে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা।
গ্রেফতার মো. ইয়ামিনের (২৪) বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। চট্টগ্রাম নগরীর আকমল আলী রোডে বাসা তার।
পুলিশ জানিয়েছে, ইয়ামিন রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন। একই বাসায় তার স্ত্রী পরিচয়ে রওশন আরা বেগম দুই বছরের সন্তান ওমর ফারুককে নিয়ে থাকতেন। রওশন সিইপিজেডে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। এর আগে তার দুবার বিয়ে হয়েছিল। ওমর ফারুক তার দ্বিতীয় সংসারের ছেলে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রওশনের ছেলেকে ইয়ামিন কোনোভাবেই সহ্য করতে পারতেন না। বিষয়টি আবার রওশন বুঝতে পারতেন না। তিনি যথারীতি ছেলেকে ইয়ামিনের কাছে রেখে কারখানায় কাজে চলে যেতেন। গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রওশন কাজে যাওয়ার পর ইয়ামিন শিশুটির গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়েছিলেন। পরদিন শিশুটিকে ধাক্কা দিলে দেয়ালের সঙ্গে লেগে মাথার পেছনে গুরুতর আঘাত পায়।’
‘বিকেলে রওশন আরা বাসায় ফিরে সন্তানকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখেন। এ সময় ইয়ামিনকে সঙ্গে নিয়ে শিশুটিকে প্রথমে মা ও শিশু হাসপাতালে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তার আইসিইউ সাপোর্টের প্রয়োজন হয়। চমেক হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি না থাকায় শিশু ওমর ফারুককে কাছেই বেসরকারি হলি হেলথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়,’— বলেন ওসি মোহাম্মদ হোসেন।
ওসি আরও জানান, শনিবার সকালে মৃত ওমর ফারুককে বাসায় নেওয়া হয়। ইয়ামিন তার দাফনের ব্যবস্থা করছিল। তখন রওশন আরা চিৎকার করে কান্না শুরু করেন এবং ছেলের মৃত্যুর জন্য ইয়ামিনকে দায়ী করতে থাকেন। তখন প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। পুলিশ গিয়ে ইয়ামিনকে আটক করে।
এ ঘটনায় রওশন আরা ইপিজেড থানায় ইয়ামিনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি মোহাম্মদ হোসেন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর