Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দমন-পীড়ন করে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন ঘটিয়েছে সরকার’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:০৪

ঢাকা: ‘দমন-পীড়ন করে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন ঘটিয়েছে সরকার’— এমনটিই অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) কারওয়ান বাজারে মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে এই মানবন্ধন হয়। এই মানববন্ধন থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আগামী মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ভোটাধিকার হরণ করে জনগণের সম্মতি ছাড়া ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে সরকার গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ গায়েবি মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সর্বাত্মক দমন-পীড়ন করে সর্বজনীন মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লংঘন ঘটিয়ে চলেছে।’

তিনি বলেন, ‘খেয়াল খুশি মতো হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, অত্যাচার-নির্যাতন এবং ফরমায়েশি সাজার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতাকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে। অথচ বাংলাদেশে যে একটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আছে সেটাই এখন বোঝা যায় না। এই কমিশন দেশের মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কোনো উদাহরণ আর রাখছে না। তারা ন্যূনতম দায়িত্বও পালন না করে সরকারের তাবেদারি করে চলেছে।’

মান্না বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন অনেকগুলো বছর ধরে কাজ করছে। কিন্তু কী কাজ করে তারা? নেপাল, ভুটানের মতো দেশ মানবাধিকারে ‘এ’শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। আমরা এতগুলো বছর ধরে ‘বি’ শ্রেণি থেকে উপরে যেতে পারি না। রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেয়, গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। আমাদের মানবাধিকার কমিশন কী করে?

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো এত বড় জালিম শাসক পৃথিবীর আর কোথাও দেখিনি। শুধু উন্নয়নের কথা বলে কী উন্নয়ন হয়েছে? ধনীদের আয় বেড়েছে ৫০ গুণ, তাদের সম্পত্তি বেড়েছে, ব্যাংক ব্যালান্স বেড়েছে। আর গরিব মানুষের আয় কমেছে। আজ টাকার জন্য তারা পেঁয়াজ কিনতে পারে না। পেঁয়াজের কেজি আড়াইশ’ টাকা। বাজারের আগুন তাদের ঘরেও লেগেছে। আর সরকার কি না বলে মানুষ ভালো আছে।’

ক্ষমতাসীন দলের উদ্দেশে মান্না বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন, এই ভুয়া ভোট করে, জাল ভোট করে ক্ষমতায় থাকবেন। তাহলে এই নির্বাচন আপনাদের নির্বাসনে পাঠাবে। আওয়ামী লীগ এমনিতেই নির্বাসনে গেছে। নৌকা এখন আর ভাসে না। নৌকা আকাশ দিয়ে ওড়ে। নৌকার মধ্যে লুটের চাল, লুটের সম্পদ। এই নৌকা আর জনগণের নৌকা নেই।’

বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। প্রতিদিন দেশের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করার ক্ষমতা রাখে না? এই কমিশন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এই ধরনের কমিশন দেশের মানুষ আর দেখতে চায় না।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ ভোট দিতে পারে না। ঐক্যবদ্ধ হোন, রাজপথের দখল নিন। তারা তফসিল, নির্বাচন বন্ধ করতে বাধ্য হবে। অপেক্ষা করেন বেশি সময় নেই এই সরকারকে মানুষ ধাওয়া করবে। তখন আর পালানোর পথ পাবে না। আমরাও তাদের ধাওয়া করব।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যে একটা মানবাধিকার কমিশন আছে, সেটাই দেশের মানুষ জানে না। আমাদের পয়সায় তারা এসি রুমে চাকরি করেন। কিন্তু তাদের যেটা দায়িত্ব, মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়া সেটার কোনো খবর নাই।’

জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ূম, প্রীতম দাশ, জেএসডির শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আনসার আলী দুলাল, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূইয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

মাহমুদুর রহমান মান্না

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর