শ্রম ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না আমেরিকা
১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৩০
ঢাকা: শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে না আমেরিকা— এ কথা বলেছেন পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তা ও নীটওয়্যার পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকোনোমিকস রিপোর্টার্স ফোরাম ( ইআরএফ) আয়োজিত পোশাক খাতের শ্রম ইস্যু নিয়ে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। বক্তব্য রাখেন শ্রম বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজিএমইএর পরিচালক এ এন সাইফুদ্দিন, শ্রমিক নেতা আমিরুল ইসলাম আমিন, শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।
মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আমরা কোনো স্যাংশনে ভীত নই। কারণ আমরা এমন কিছুই করিনি যে স্যাংশন আসতে পারে। আইএলও কনভেনশনের ১০টির মধ্যে ৮টি পূরণ করেছি। বাংলাদেশ এমন অবস্থা নেই যেখানেই আমেরিকা নৈতিক অবস্থান থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। শ্রম ইস্যুতে প্রতিযোগী দেশের মধ্যে ভালো অবস্থান বাংলাদেশের। চীনের চেয়েও শ্রম ইস্যুতে আমরা এগিয়ে। এরপরও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিলে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে। রাজনৈতিক কারণে হলে তা অবশ্যই সরকারকে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের উদ্যোত নিতে হবে।’
শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ববান শ্রমিক সংগঠন বা নেতা হলে তিনি কারখানার ক্ষতি করতে পারে না। অনেক পক্ষ আছে যারা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়েও ভয় কাজ করে মালিকপক্ষের মধ্যে। ট্রেড ইউনিয়ন মানেই যখন তখন কাজ বন্ধ করে দিবে সে ধরনের ইউনিয়ন নিয়ে আমরা ভীত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের আন্দোলন শ্রমিকদের আন্দোলন ছিল না। তাহলে কারা ভাঙচুর করল সেটি দেখতে হবে। তাদেরকে যারা উৎসাহিত করল তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। ফুটেজ ছাড়া যাদের নামে মামলা হয়েছে আমরাও তাদের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। নিরীহ শ্রমিকের ওপরে মামলা-গ্রেফতার না করতে শিল্প পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই।’
বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘শ্রম বিষয়ে বর্তমানে আমরা অনেক দেশ থেকে ভালো অবস্থানে আছি। আন্তর্জাতিকমানের দিক থেকেও ভালো আছি। ক্ষতিপূরণের দিক থেকে আমরা উন্নত দেশের মতো অবস্থায় আছি। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে মনে ভয় থাকে। ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সেভাবে নার্সিং করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ২৫০০ কারখানার মধ্যে ১৩০০র বেশি কারখানায় ইউনিয়ন হয়েছে। আমাদের সেক্টরে শ্রমিক নেতা দুই ধরনের হয়ে থাকে। তাদের একটা সেক্টর বাঁচাতে কাজ করে আর একটা আছে বাইরে থেকে ডলার এনে নিজের স্বার্থ দেখে। শ্রমিক নেতা মানে দাবি-দাওয়া না, কারখানাকেও এগিয়ে নিতে হবে। আমেরিকার যে আইনটার কারণে আমাদের ভয় সেখানে দুইটা দিক আছে। একটা পর্দার সামনে অপরটি পর্দার বাইরের দিক। আমেরিকা বিষয়ে এখন যে পরিস্থিতি আছে সেটা রাজনৈতিক। এটিকে কূটনীতিক ভাবে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারকে এখানে উদ্যোগ নিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, আকস্মিকভাবেই গত বৃহস্পতিবার ‘শ্রম অধিকার লঙ্ঘনকারীদের’ বিরুদ্ধেও ট্রেড প্যানাল্টি বা বাণিজ্যে জরিমানা, ভিসা বিধিনিষেধসহ শাস্তিমূলক পদক্ষেপের নির্দেশনা জারি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ‘মেমোরেন্ডাম অন অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এমপাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শীর্ষক এ সংক্রান্ত এক স্মারকে ওই সই করেছেন তিনি। এর পর থেকেই দেশে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে