জি এম কাদেরের সঙ্গে জোট না করতে রওশনের অনুরোধ
১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:২২
ঢাকা: গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা বা জোট না করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানিয়েছেন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রওশন এরশাদ এই অনুরোধ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে দুপুরে ব্রিফিং করেন রওশন এরশাদের অনুসারী জাতীয় পার্টির মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদ।
তিনি জানান, বেগম রওশন প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির একটা খণ্ডিত অংশ নির্বাচনে যাচ্ছে। জি এম কাদের অবৈধভাবে জাতীয় পার্টি দখল করেছে। দলের শত শত নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে। তাদের মনোনয়ন বঞ্চিত করেছে। এ কারণে রওশন এরশাদ নির্বাচন বর্জন করেছেন। সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট বা কোনো ধরনের সমঝোতা না করা হয়। জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোন ধরনের সমঝোতা করতে চাইলে যেন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘জি এম কাদেরের প্রতি আমাদের কোনো সমর্থন নেই।’
আপনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কি বলেছে? জবাবে রওশন এরশাদ বলেন, ‘এখন তো সময় নেই, কী বলবে?’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির যে চেয়ারম্যান তিনি আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেননি। আমার ছেলের আসনে তিনি (জি এম কাদের) ইলেকশন করতেছেন। ওর (সাদ) কথা তার মনে নেই।’
তাহলে কি দলের একটি পক্ষ নির্বাচন করছে? এতে কি আপনার সমর্থন আছে? জবাবে রওশন বলেন, ‘আমাকে তো ইচ্ছে করে বাদ দিয়েছে। সমর্থন কেন থাকবে?’
৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, এ নির্বাচনে আপনার সমর্থন আছে জানতে চাইলে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের প্রতি সমর্থন আছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রওশন এরশাদের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, আমাদের বিরোধী দলীয় নেতা (রওশন এরশাদ) বলেছেন, তারা (জাতীয় পার্টি) আমাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেনি। সুতরাং তারা তাদের মতো ইলেকশন করবে। কিন্তু যদি অ্যালায়েন্স করতে হয় আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমরাও অ্যালায়েন্সের ভাগীদার হতে পারি।
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন এবং রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।
এর আগে, গত ১৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, ‘তিনি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পত্মী। তিনি দল পরিচালনা করেছেন। জেল খেটেছেন আড়াই বছর। সাদ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে, সেও আড়াই বছর জেলে ছিল। ছোটবেলা থেকে জেলে ছিল। এরশাদ সাহেবের সন্তানের এমপি হওয়ার অধিকার তো রয়েছে। কিন্তু সাদের আসনে তিনি নিজে দাঁড়িয়েছেন। এটি তো নেতৃত্বসুলভ আচরণ হলো না। উনি আত্মীয়ের সঙ্গে সমস্যা করলেন। ভাবী সম্পর্কেও কুমন্তব্য করেন। ওনার মহাসিচব তিনিও করেন। আমার সম্পর্কে অনেক গীবত ওনারা করেন, করুক। রাজনীতি করতে গেলে শুনতে হয় এগুলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি আসছিলেনে যে, আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের আরও এ রকম নেতাকর্মী অন্তত আড়াই থেকে তিনশ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে এবং তাদের কাউকেই মনোনয়ন তারা দেয়নি।’
মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ আরও বলেন, ‘আমাকে তো বহিষ্কার করা হয়েছে, বহিষ্কার আছি। আমরা চাই যে, আমরা ওদের সঙ্গে থাকব না। সুতরাং তারা তাদের মতো ইলেকশন করবে। দেশব্যাপী ইলেকশন হোক, উৎসবমুখর ইলেকশন হোক কিন্তু যদি অ্যালায়েন্স করতে হয় আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে। আমরাও অ্যালায়েন্সের ভাগীদার হতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি পরিষদ নিয়ে বসবেন। আলোচনা করে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।
সারাবংলা/এএইচএইচ/এনআর/একে
জাতীয় পার্টি জাপা নির্বাচনি অ্যালায়েন্স প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা