নাশকতাকারীদের কোনো ক্ষমা নেই : প্রধানমন্ত্রী
১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫২
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নাশকতার করছে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমি জনগণকেও বলব, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) গণভবনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্র গাজীপুরে রেললাইন উপড়ে ফেলার কারণে যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে এ সময় সে কথাও উল্লেখ করে তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মানুষ মারার জন্য রেললাইন উপড়ে ফেলে বা রেললাইন কেটে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে এদের মধ্যে মনুষ্যত্ব বোধ বলে কিচ্ছু নেই। এদের জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান সারাদেশের মানুষের প্রতি।’
‘যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ-সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে এদের ক্ষমা নাই। এদের একদিন শাস্তি পেতেই হবে। জনগণকে বলব, এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান’- যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগের রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গ্যাসকাটার মেশিন দিয়ে প্রায় ২০ ফুট রেল ট্র্যাক কাটার ফলে নেত্রকোনা থেকে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের আটটি বগি গাজীপুরে লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের কাজ বিএনপি সন্ত্রাসীরা করেছে। সেটা সঙ্গে সঙ্গে ধরা পড়েছে। আমরা সেখানে মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু এটা হয়েছে একেবারে ভোর রাতের দিকে। দুর্বৃত্তরা গ্যাস সিলিন্ডারসহ, গ্যাসকাটার মেশিন ফেলে চলে গেছে। ওটা উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটু চিন্তা করে দেখুন, কী রকম ধ্বংসাত্মক কাজ। এর নাম আন্দোলন।‘
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি না এই আন্দোলন করে কী পাবে তারা। বিএনপি যে এই জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। প্রতিদিন অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল অবরোধ মানে কি কয়েকটি বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো? চাল যাচ্ছে, চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। ধান যাচ্ছে, ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধায় মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা ২০১৩ সালে করেছে। আমি জানি না তাদের কোনো মতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে তারা সরকার উৎখাত করতে পারবে না।’ এ সময় বিএনপি’র রাজনীতির লক্ষ্য এবং আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই দেশে তারা কি রাজনীতি করে? তাদের দলটা কোথায়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য। যেখানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, সেই সময় যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটায় এদেশের ভবিষ্যৎটা কি। সেটাই আমার প্রশ্ন।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের কাছে যাবে, জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার তো কোনো চেষ্টা আমাদের নাই। আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি দেশের উন্নতি করছি। দেশের যে উন্নতি হয়েছে এটাতো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজ বাংলাদেশটা বদলে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কাউকে পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এইটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে।’
এফবিসিসিআই এর সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের আগস্টে নির্বাচিত ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের জন্য নতুন কমিটি এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এফবিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী এবং তিন সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার ও যশোদা জীবন দেবনাথ নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। [সূত্র: বাসস]
সারাবাংলা/পিটিএম
