৫২ বছরেও অজানা একাত্তরের বধ্যভূমি-গণকবর-নির্যাতনকেন্দ্রের সংখ্যা
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:০৮
স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও জানা যায়নি দেশে কতগুলো গণকবর আছে। নির্দিষ্ট করে কেউ জানেন না, ২৬৬ দিনের যুদ্ধে কতগুলো স্থানে কতটি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছেও নেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য। তবে গণহত্যা, নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণাকেন্দ্র বলছে, তারা ২০টি জেলায় চার হাজার ছয় শর বেশি বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতনকেন্দ্র চিহ্নিত করেছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ওয়েবসাইট ঘেঁটেও গণকবর, বধ্যভূমি বা নির্যাতনকেন্দ্রের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী মন্ত্রণালয় স্মৃতিসৌধ, স্মৃতিস্তম্ভ, আবাসন প্রকল্প, সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরমা নির্মাণ প্রকল্প, স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প তালিকার ৮ নম্বরে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় ‘১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ গ্রহণ করা হয়। ৪০টি জেলার ১১০টি উপজেলায় ২৮০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমির আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পাদন করার জন্য হাতে নেওয়া প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ ১৩ হাজার টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে।
২০০১ সালের ২৩ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২২ বছরেও সংগ্রহ করতে পারেনি একাত্তরের বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতনকেন্দ্রের সংখ্যা। এ বিষয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাত্তরের শহিদ পরিবারের একাধিক সন্তান জানিয়েছেন, সরকারের নানা পর্যায়ে একাধিকবার ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। ফলে এক ধরনের হতাশা থেকেই তারা এখন আর এ বিষয়ে কথা বলছেন না।
তারা বলছেন, মন্ত্রণালয় এমন সব প্রকল্প গ্রহণ করে যার সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষ রয়েছে, কিন্তু কষ্টসাধ্য নয়। বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতনকেন্দ্র খুঁজে বের করার মতো কঠিন কাজটি তারা করতে ইচ্ছুক নয়। যেসব বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতনকেন্দ্র এরই মধ্যে চিহ্নিত, সেসব স্থান ঘিরেই সব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
চিহ্নিত করতে না পারা বধ্যভূমি, গণকবর ও নির্যাতনকেন্দ্র চিহ্নিত করাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও রাজাকারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সারাবাংলা/রমু/টিআর
একাত্তর একাত্তরের গণকবর একাত্তরের নির্যাতনকেন্দ্র গণকবর গণহত্যা মুক্তিযুদ্ধ