হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধ
১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:২৪
ঢাকা: মহান বিজয় দিবসের দিনে হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ওঠেছে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে রাষ্ট্রপতি মো.শাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণের পর স্মৃতিসৌধ সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা জানাতে সবাই দাঁড়ান এক কাতারে। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে আসেন অনেকেই।
কোলের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়সের অনেক প্রবীণ নাগরিকও আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আসেন ইউনিফর্ম পরে। আবার নানা রঙের রঙিন পোশাক পরে শিশু কিশোরদের স্মৃতিসৌধ আসতে দেখা যায়।
অনেক শিশু এসেছেন বাবার হাত ধরে। আবার অনেক প্রবীণ নাগরিক এসেছেন সন্তানের হাত ধরে। এ ছাড়া প্রিয়জনের হাত ধরেও শ্রদ্ধা জানাতেও আসেন অনেকেই।
এর আগে সকাল ৬.৩৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তখন রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
এরপর স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে সই করেন রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রীও দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি চলে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আরও একবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্য মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগ শাজাহান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ৬টা ৪০ মিনিটে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ৪টা ৪১ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর বিদেশি কূটনীতিকরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ৬টার ৫০ মিনিটে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর।
এরপর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদ, গণফোরাম, গণ অধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/আইই