ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে নির্বাচিত করবে এবং কে সরকারে আসবে। ওই অগ্নিসন্ত্রাস আর খুন করে জনগণের হৃদয় জয় করা যায় না। এটা তাদের জানা উচিত। এটা বুঝেই তাদের চলা উচিত।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সরকারের টানা মেয়াদে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিসহ নানামুখী অবকাঠামোগত উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ১৫ বছরের মধ্যে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ; শিক্ষা-দীক্ষায় জ্ঞানে-প্রযুক্তিতে। এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। দেশ-বিদেশের সকলে বোঝে। বোঝে না এখানকার কতগুলো। মানে- বুদ্ধি বেচিয়া জীবিকা নির্বাহ করে যাহারা, তাহারাই বোঝে না। আমাদের সাধারণ মানুষ কিন্তু বোঝে। তারা আছে আমাদের সঙ্গে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ জানে তাদের কীসে ভালো, কীসে মন্দ। আর কোনো দল ক্ষমতায় থাকলে তাদের কল্যাণ হয়। এই বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ। এখানে কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। বিনা পয়সায় আমরা ঘর করে দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। ২০৪১ সালে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সরকার হবে স্মার্ট, জনগণ হবে স্মার্ট, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট হবে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে। বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে তাকাবে না, এগিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটাই আহ্বান, এই দুর্বৃত্ত অগ্নিসন্ত্রাসী, খুনি, যারা মানুষ খুন করার জন্য রেললাইনের পাত ফেলে দেয়, রেললাইন কেটে রাখে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়-ি এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে জবে।’
রেললাইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থাপনা পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারাই আগুন লাগাতে যাবে, যারাই ফিশপ্লেট খুলতে যাবে, যারাই রেললাইন কাটতে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে ধরিয়ে দিন। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিন। কারণ এই ধ্বংসাত্মক কাজ এ দেশে চলতে পারে না। তাদের হরতাল-অবরোধে তারা নিজেই অবরুদ্ধ হয়ে যায়। খালেদা জিয়া তো বছরের পর বছর অবরুদ্ধ। কারণ সে যে অবরোধ ঘোষণা দিয়েছিল ২০১৪ সালে তা এখনো তোলে নাই। এখন আবার অবরোধ দিয়েছে, আবার হরতাল দিয়েছে।’
করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে শুরু করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশনের ধাক্কা সামাল দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এগিয়ে চলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা হরতাল-অবরোধ দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ফের ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের মানুষ কি এটা মেনে নেবে? এই বার্তাটা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এরা মানুষের কল্যাণ চায় না। লুটপাটের রাজত্ব চায়। এরা ভোটে যেতে সাহস পায় না। কারণ, তারা জানে এদের মানুষ ভোট দেবে না। তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। নির্বাচন বানচাল করে সরকার উৎখাত করতে চায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধ ক্ষমতাদখলকারীর পকেট থেকে আসেনি। আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি-মানুষের সংগঠন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেই এই সংগঠন গড়ে উঠেছে। কাজেই এই সংগঠনের শিকড় অনেক দূরে প্রোথিত। আওয়ামী লীগকে তারা কোনদিনেই উৎখাতও করতে পারবে না, দাবাতেও পারবে না। ভোট ও ভাতের অধিকারের আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা করেছি। নির্বাচনি সংস্কার আমরা করেছি। জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে নির্বাচিত করবে এবং কে সরকারে আসবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।