বিপুল চাকমাসহ ৪ নেতার খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে অবরোধ পালিত
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০৮
খাগড়াছড়ি: পিসিপি’র সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ ইউপিডিএফ ও পিসিপি যুব ফোরামের চার নেতা খুনের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, শাস্তি ও ঠাঙাড়ে বাহিনী (নব্যমুখোশ) ভেঙে দেওয়ার দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) খাগড়াছড়ি জুড়ে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো। এদিন সকাল ৬টা থেকে নেতাকর্মীরা ও সমর্থকরা খাগড়াছড়ির সব উপজেলার বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এ সময় তারা ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। অবরোধ চলাকালে বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অবরোধ কর্মসূচির প্রতি জনগণের সমর্থন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। যানবাহন মালিকরা রাস্তায় গাড়ি নামানো থেকে বিরত ছিলেন। ফলে খাগড়াছড়ি শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। শহরের ভেতরে খুব কম সংখ্যক টমটম ও অটোরিকশা চলাচল করলেও সদর উপজেলার অন্যান্য সড়কগুলোতে যান চলাচল ছিল সম্পূর্ণ বন্ধ। এ ছাড়া দীঘিনালা, পানছড়ি, মহালছড়ি, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, রামগড়, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায়ও দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল করেনি।
ইউপিডিএফ’র মুখপাত্র ও খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কনিকা দেওয়ান, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা এক যুক্ত বিবৃতিতে অবরোধ কর্মসূচি সফল করায় জেলার বাস, ট্রাকসহ সকল যানবাহন মালিক, চালক, শ্রমিক ও সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা ঘটনার এক সপ্তাহ পরও চার নেতার খুনিদের গ্রেফতার না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একটি বিশেষ গোষ্ঠী হত্যাকারীদের রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে অভিযোগ করে তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কারা খুন, সন্ত্রাস, অরাজকতা ও অশান্তি সৃষ্টি করছে তা চার নেতার খুনের ঘটনায় আরও একবার দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।
তারা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বিশেষ এক গোষ্ঠী ঠ্যাঙাড়ে দিয়ে মিঠুন চাকমা ও তপন-এল্টন চাকমাসহ ইউপিডিএফের ৫৫ জন নেতাকমী ও সমর্থককে হত্যা করেছে। সরকারকে এই হত্যার মহোৎসব অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
খুন, সন্ত্রাস করে ইউপিডিএফকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যাবে না বলে নেতারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ সময় তারা ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাস রুখতে ছাত্র-যুব-নারীসহ সর্বস্তরের জনগণকে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর দল পানছড়ির লোগাঙ এলাকার অনিল পাড়ায় একটি বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পিসিপির সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সুনীল ত্রিপুরা, ইউপিডিএফ সংগঠক রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা (রহিনসা) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহসভাপতি লিটন চাকমাকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
সারাবাংলা/পিটিএম