সাইকেলে চড়ে নির্বাচনি প্রচার শুরু হাছান মাহমুদের
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই নিজ নির্বাচনি এলাকা চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে প্রচারে নেমেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে সাইকেল চালিয়ে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন তিনি। এর আগে তিনি কর্ণফুলী নদী পাড় হন নৌকায় চড়ে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সাইকেল চালিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক দিয়ে মরিয়মনগর চৌমুহনী পর্যন্ত যান। এ সময় শত শত নেতাকর্মী তার সঙ্গে সাইকেলের র্যালিতে যুক্ত হন। পরে পথসভার মধ্যে গিয়ে সাইকেল র্যালিটি শেষ হয়।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাইকেল ও নৌকায় চড়ে নির্বাচনি প্রচার করেছিলেন। তথ্যমন্ত্রী জানান, সেই স্মৃতিকে স্মরণ করতেই তিনিও নৌকায় চড়ে কর্ণফুলী নদী পাড় হয়ে সাইকেলে চড়ে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন।
‘শক্তিশালী ভিটামিন দিয়েও বিএনপিকে দাঁড় করানো যাচ্ছে না’
সোমবার বিকেলে নির্বাচনি প্রচার শেষে পথসভা করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি মন্তব্য করেন বিএনপিকে শক্তিশালী ভিটামিন দিয়েও দাঁড় করানো যাচ্ছে না।
নির্বাচন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা গর্তের মধ্যে ঢুকে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ দেশে-বিদেশে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা বেলুনের মতো টুস করে চুপসে গেছে। এখন শক্তিশালী ভিটামিন ট্যাবলেট দিয়েও বিএনপিকে দাঁড় করানো যাচ্ছে না।’
‘আগামী ৭ জানুয়ারি ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হবে। সারাদেশের মতো এই রাঙ্গুনিয়াতেও হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষ নিয়ে আমরা সবাই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবো। নির্বাচন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, তারা এখন গর্তের মধ্যে ঢুকেছে,’— বলেন হাছান মাহমুদ।
বিএনপির রুহুল কবির রিজভীও গর্তে ঢুকে গেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যখন ইঁদুরকে দৌড়ানো হয়, ইঁদুর তখন গর্তের মধ্যে ঢুকে। জনগণ বিএনপিকে ধাওয়া করেছে, জনগণের দৌড়ানি খেয়ে গর্তের মধ্যে ঢুকেছে। আপনারা যারা ইঁদুর ধাওয়া করেছেন তারা জানেন, ইঁদুর গর্তের ভেতর ঢুকে চোখ মেলে মেলে তাকায়। এখন বিএনপির রিজভী আহমেদ গর্তের ভেতর থেকে চোখ মেলে মেলে তাকান আর কর্মসূচি ঘোষণা করেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির কর্মসূচি হচ্ছে গাড়ি ঘোড়া পোড়ানো। গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। যারা গাড়ি-ঘোড়া পোড়ায় তাদের আমরা বর্জন করি, তাদের জনগণও বর্জন করেছে।’
‘সুতরাং রাঙ্গুনিয়ার মাটিতেও তাদের কোনো স্থান নেই। রাঙ্গুনিয়ায় যারা ছিল তারাও গর্তের মধ্যে ঢুকেছে। আমরা কিন্তু বলি নাই গর্তের মধ্যে ঢোকার জন্য, এরপরও জনরোষ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যই তারা এখন গর্তে ঢুকেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ নির্বাচন যেন না হয়, সেজন্য অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত মনে করেছিল, আমরা নির্বাচন করতে পারব না। এখন তারা বুঝতে পেরেছে, সব প্রতিকূলতাকে উপড়ে ফেলে দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক জনগণের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যেভাবে প্রতিবার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আপনারা ভোট দিয়েছেন, এবারও দ্বিগুণ উৎসাহে মা-বোনদের সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাই।’
নির্বাচনি এলাকার জনগণের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি প্রতিবারই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি, কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আমি সব মত-পথের মানুষের এমপি হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। কে কোন দলের, কখনো দেখিনি। আমার কাছে যিনিই গেছেন, আমি কাউকে নিরাশ করিনি।’
‘গত ১৫ বছর ধরে আমার দুয়ার সব মানুষের জন্য খোলা ছিল। এখন আমি আপনাদের দুয়ারে হাজির হয়েছি, আপনাদের কাছে আমার বিনীত ফরিয়াদ, আপনারা দয়া করে আমার জন্য আপনাদের দুয়ারটি খুলে দেবেন।’
এ সময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম তালুকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খান ও গিয়াস উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/টিআর