Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জবিশিস নির্বাচনে নীল দলের ২ প্যানেল, ভোট না করেও নিয়ামক সাদা দল

আবু সুফিয়ান সরকার শুভ, জবি করেসপন্ডেন্ট
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:৫৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৪-এ আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে ভোট করছেন। বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তবে প্যানেল দিয়ে প্রার্থিতায় না থাকলেও ভোটের মাঠে শিক্ষকদের এই অংশটি প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ভোট শুরু হবে সকাল ৯টায়, চলবে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের তিন সংগঠন দুটি নীল দল ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ মিলে দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে নির্বাচন করছে।

বিজ্ঞাপন

জবিশিস নির্বাচনে এবার ভোটার হয়েছেন ৬৬৭ জন শিক্ষক। নির্বাচনে সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদের প্রতিটির বিপরীতে একেকটি প্যানেল থেকে একজন হিসাবে ১০ জন লড়াই করছেন। ১০টি সদস্যপদের বিপরীতেও প্রতিটি প্যানেল থেকে রয়েছেন একজন করে প্রার্থী। এই পদে মোট প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা ২০।

শিক্ষক সংগঠনের এই নির্বাচনে নীল দল (ছিদ্দিকুর-মনিরুজ্জামান পরিষদ) ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে সভাপতি পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন প্যানেলকে সমর্থন করছেন।

অন্যদিকে নীল দলের আরেকাংশ (নূরে আলম আব্দুল্লাহ-মমিন উদ্দীন পরিষদ) যে প্যানেল দিয়েছে, তাতে সভাপতি পদে প্রার্থী পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ-উল-আলম, সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ফিন্যান্স বিভাগের ড. শেখ মাশরিক হাসান। দুই প্যানেল থেকে পাল্টাপাল্টি নির্বাচনি ইশতেহারও ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই দুই প্যানেলের সমর্থনে শিক্ষকদের সংখ্যা কত, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে প্যানেল দিয়ে ভোট না করা বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সদস্য সংখ্যা দেড় শতাধিক বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষকদের এই অংশের ভোটেই নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে।

এদিকে সাদা দলের দাবি, তাদের মধ্য থেকে শিক্ষকরা ভাগ হয়ে নীল দলের দুই অংশের মধ্যে মিশে গেছেন। তবে সাদা দলের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি মানতে রাজি নয় নীল দলের কোনো অংশই। একাংশ বলছে তারা আশ্রায়নে বিশ্বাসী নয়, আরেক অংশ এ ধরনের অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে নীল দল ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের ঐক্যবদ্ধ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা যে ইশতেহার দিয়েছি, সেই ইশতেহার বাস্তবায়ন করা গেলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রদের কল্যাণ হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যদি আরও ভালোর দিকে যায়, তাহলে ছাত্র হিসেবেও সেটি সবার জন্যই গর্বের হবে। আমি চাই, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা যেন আমাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে পারি।

নীল দলের আরেকাংশের সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ-উল-আলম বলেন, আমাদের থেকে যারা চলে গেছে তাদের কোনো প্রভাব আমাদের নির্বাচনে পড়বে না। তারা নতুন একটি সংগঠনও খুলেছে। আমরা জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই নির্বাচন করছি।

নীল দলের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, নীল দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচন করে এবং গঠনতন্ত্র অনুসারেই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। আশা করছি শিক্ষকরা এবারও আমাদেরকেই মূল্যায়ন করবে। আমরা ১৫টি পদেই জয়ের প্রত্যাশা করছি।

নীল দলের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা এবার অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের মিশ্রণে একটি প্যানেল দিয়েছি, যারা সবাই অত্যন্ত উদ্যমী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুন্দর গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিতে ও সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে তারা বদ্ধপরিকর। আশা করি শিক্ষকরা সেই ভরসা রেখেই এবারের নির্বাচনে এই প্যানেলকে জয়ী করবেন।

আওয়ামীপন্থি আরেক দল জয় বাংলা শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে না পারায় এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে পারছি না। তবে যারা শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করবে আমরা তাদের সঙ্গেই আছি।’ এই পক্ষটির সমর্থন বর্তমান শিক্ষক সমিতির দিকেই বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি একসঙ্গে কাজ করার। সে লক্ষ্যেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্যানেল দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আওয়ামীপন্থি নতুন দল স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক ড. কাজী মো. নাসির উদ্দীন বলেন, শিক্ষকদের জন্য ভালো কিছু করতেই সমমনাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা একতাবদ্ধ হয়েছি। আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে যৌথভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

নির্বাচন নিয়ে সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রহসনসহ নানা প্রেক্ষাপটে সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে শিক্ষক সমিতি কোনোদিনও শিক্ষকদের কল্যাণে আসেনি, সে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করতে চাই না।

জবিশিস কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মো. ছগীর হোসেন খন্দকার বলেন, নির্বাচনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচনে কেউ কোনো নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

প্রধান কমিশনার ছাড়াও আরও চার কমিশনার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা জানান, ভোট কক্ষে কোনো ভোটার ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ বা টেলিযোগাযোগ করার উপযোগী কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না।

তারা আরও জানান, সদস্য পদ ছাড়া অন্য কোনো পদে কোনো ভোটার একাধিক প্রার্থীকে ভোট দিলে ওই পদে তার দেওয়া ভোট বাতিল গণ্য হবে। সদস্য পদে একজন ভোটার সর্বাধিক ১০ জনকে ভোট দিতে পারবেন। ১০ জনের বেশী প্রার্থীকে ভোট দিলে সদস্য পদে দেওয়া সব ভোট বাতিল গণ্য হবে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।

সারাবাংলা/টিআর

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জবি জবি শিক্ষক সমিতি জবিশিস নীল দল সাদা দল

বিজ্ঞাপন

আদানি গ্রুপের নতুন সংকট
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর