যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যা, স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:০০
বেনাপোল (যশোর): জেলার পোর্টথানায় ফাতেমা খাতুন (২৭) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যৌতুকের জন্য স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর ও পরিবারের বাকি সদস্যরা মিলে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে বাড়ির সবই সদস্য পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক সংলগ্ন পৌরগেট বরাবর আমড়াখালী (কাগমারী) গ্রামে রেললাইনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত ফাতেমা বেগম বেনাপোল পোর্টথানার পোড়াবাড়ী নারায়ণপুরে শাহাবুদ্দিনের মেয়ে। এছাড়া একই থানার আমড়াখালী (কাগমারী) গ্রামের বাসিন্দা সালাহউদ্দিনের স্ত্রী। তিনি পেশায় একজন ট্রাক ড্রাইভার।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ২০২০ সালে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর ও পরিবারের বাকি যৌতুকের জন্য ফাতেমার উপর নির্যাতন করে আসছিলেন। তাই বাধ্য হয়ে ফাতেমার গরীব পিতা নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে ৪-৫ লাখ টাকা দিয়ে সালাহউদ্দিনকে একটি কাভার্ডভ্যান কিনে দেয়। কিন্তু এরপরও থেকে থাকেনি নির্যাতন। আরও যৌতুক পাওয়ার আসায় স্ত্রীকে প্রায় মারধর করেন সালাহউদ্দিন। এ নিয়ে ফাতেমার শ্বশুর বাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশের মাধ্যমে সালাহউদ্দিন ও তার পরিবারকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু তারপরও যৌতুকের জন্য ফাতেমার উপর নির্যাতন করতে থাকে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা।
আরও জানা যায়, এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে মৃত ফাতেমার সঙ্গে স্বামী সালাহউদ্দিনের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় মারধর শেষে ফাতেমাকে ঘরে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ফাতেমার শ্বশুর জুলহাস, শাশুড়ি ছালেহার, দেবর সালমান হোসেন ও তার স্ত্রীসহ অন্য হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় বাড়ির ২টি গরু, বেশ কয়েকটি ছাগল এবং ঘরের যাবতীয় মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যান তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে এবং লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেনাপোল পোর্টথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডটি সবাইকে মর্মাহত করেছে। হত্যাকারীরা পলাতক রয়েছেন। তাদের ধরতে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এসকেএনইউ/এনএস