Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একরাম হত্যার ৪ বছর, শঙ্কা কাটেনি পরিবারের


২০ মে ২০১৮ ২০:৪৬

।। মুহাম্মদ আরিফুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

ফেনী: ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যার চার বছর পূর্ণ হলো রোববার (২০ মে)। ২০১৪ সালের এই দিনে ফেনী শহরের একাডেমি সড়কে প্রকাশ্য কুপিয়ে ও গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। এ সময় তাকে বহনকারী গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এ হত্যাকাণ্ডে বিশ্ব মিডিয়ায় নিন্দা ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছিল। ইতোমধ্যে গত ১৩ মার্চ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলার রায়ে ৩৯ আসামিকে ফাঁসির আদেশ ও ১৬ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

তবে এই হত্যাকাণ্ডের ১৯ আসামি এখনো পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত পরিবারের শঙ্কা কাটবে না এমনটা জানিয়েছেন নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদী মোজাম্মেল হক। তিনি জানান, দোষীদের মধ্যে কেউ কেউ উপযুক্ত শাস্তি পেলেও হত্যাকাণ্ডের হোতা থেকে গেছে পর্দার আড়ালে। তাদেরকে মোবাইলের কল লিস্ট চেক করে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধু খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করতে পারলে আমার ভাই আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী তার খুনিদের বিচার করতে কেন পারবে না সরকার।

যারা পলাতক রয়েছে তাদেরসহ একরাম হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহম্মদ বলেন, একরাম হত্যা মামলায় মোট আসামি ৫৬ জন। জেলখানায় আছে ৩৬ জন। পলাতক ১০ জন। জামিনের পর পলাতক ৯ জন দেশ ছেড়ে পালিয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। জামিন নেয়ার পর রুটি সোহেল নামে এক আসামি র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন। পলাতকদের অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, শুরু থেকে যারা পলাতক তারা হচ্ছে, ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, টিটু, রাহাত মো. আরফান আজাদ, শরিফুল ইসলাম পিয়াাস, বাবলু, শফিকুর রহমান ময়না, এশরাম হোসেন আকরাম, মহি উদ্দিন, মোসলেহ উদ্দিন আসিফ।

জামিন নিয়ে যারা পলাতক তারা হচ্ছে এমরান হোসেন রাসেল, জাহিদুল হাসেম সৈকত, চৌধুরী মো. নাফিস উদ্দিন অনিক, মো. ইউনুছ ভূঁইয়া শামীম প্রকাশ টপ শামীম, আবিদুল ইসলাম আবিদ, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, নুরুল আফসার জাহিদ চৌধুরী, আরমান হোসেন কাউসার, জসিম উদ্দিন নয়ন। এদের মধ্যে ৫ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আদেল, ফুলগাজী উপজেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবদুল্লা হিল মাহমুদ শিবলু, আবিদুর রহমান আবিদ, এমরান হোসেন রাসেল প্রকাশ ইঞ্জিনিয়ার রাসেল, জিয়াউল হক বাপ্পি, আজমীর হোসেন রায়হান, মো. শাহজালাল উদ্দিন শিপন, কাজী শাহনান মাহমুদ, নুর উদ্দিন মিয়া, আবদুল কাইয়ুম, সাজ্জাদুল ইসলাম পাটোয়ারী, জাহিদুল হাশেম সৈকত, আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রকাশ বক্কর, আরমান হোসেন কাওসার, চৌধুরী মো. নাফিজ উদ্দিন অনিক, জাহিদুল ইসলাম, ফেরদৌস মাহমুদ খান হীরা, সজীব, ইকবাল, পাংকু আরিফ, ইসমাইল হোসেন চুট্টু, জসিম উদ্দিন নয়ন, মামুন, মো. সোহান চৌধুরী, মানিক, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, টিটু, নিজাম উদ্দিন আবু, রাহাত মো. এরফান, টিপু, আরিফ প্রকাশ নাতি আরিফ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, রুবেল, বাবলু, শফিকুর রহমান ময়না, রিপন, একরাম হোসেন আকরাম, মহি উদ্দিন আনিস ও  মোহলেহ উদ্দিন আসিফ।

এই মামলার ১ নম্বর আসামি জেলা তাঁতী দলের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মিনারসহ ১৬ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন জেলা যুবলীগের নেতা জিয়াউল আলম মিস্টার, কাজীরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান রউপ, আনন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী বেলায়েত হোসেন পাটোয়ারী, সাইদুল করিম পাপন, রিপন, ইকবাল হোসেন, শরিফুল জামিল পিয়াস, কালা মিয়া, মো. ইউনুস ভূঞা শামীম প্রকাশ টপ শামীম, আলমগীর প্রকাশ আলা উদ্দিন, কাদের, ফারুক, জাহিদ হোসেন ভূঞা, মো. মাসুদ ও মো. শাখাওয়াত।

বিজ্ঞাপন

২০১৪ সালের ২০মে একরাম হত্যাকাণ্ডের পর দিন ২১ মে নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মাহাতাব উদ্দিন মিনারকে প্রধান আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

সারাবাংলা/এমএইচ/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর