নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধে ৯১ বিশিষ্ট নাগরিকের আহ্বান
১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৫৬
ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন ৯১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিরোধ করে দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা।
বিবৃতিতে ৯১ জন বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, বাংলাদেশে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান অনুযায়ী ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা সচেষ্ট রয়েছেন। কিন্তু একটি মহল নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে গণসমাবেশের নামে বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে একজন কর্তব্যরত নিষ্ঠাবান পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। এমনকি প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও হাসপাতালে তারা তাণ্ডব চালায়। পরবর্তী সময়ে বাসের ভেতরে ঘুমন্ত শ্রমিককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৯ অক্টোবর থেকে অদ্যাবধি বিএনপি-জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিপুল সংখ্যক যানবাহন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নজিরবিহীন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি খাদ্যপণ্য বহনকারী যানবাহন, কাঁচামাল বহনকারী ট্রাক ও পিকআপ তাদের এই তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি। গত ১২ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা গাজীপুরের রেল লাইনের ফিস প্লেট উপড়ে ফেলে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটায়, একজন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়াসহ অসংখ্য ট্রেনযাত্রী আহত হয়। সর্বশেষ আজ ১৯ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা বিমান বন্দর ও তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় আন্তঃনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিতে সন্ত্রাসীচক্র অগ্নি সংযোগ করে । এই ঘটনায় চার জন নিরীহ যাত্রী নির্মমভাবে নিহত হয়। রাজনীতির নামে পরিচালিত দুর্বৃত্তদের এই ধরনের নৃশংস বর্বরতা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না ।
তারা বলেন, এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রতিরোধ করে দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা। একই লক্ষ্যে দেশের একটি চিহ্নিত মহল সংবিধানের একটি নির্ধারিত ধারার অপব্যাখ্যা দিয়ে নির্বাচনের সময়সূচি পরিবর্তন করে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। ইতিমধ্যে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। চূড়ান্তভাবে অংশগ্রহণ করা প্রার্থীদের সংখ্যা ১৮৯৬ জন। প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সারা দেশে সৃষ্টি হয়েছে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের উৎসমুখর পরিবেশ।
সকল বিভ্রান্তি ও বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বাংলাদেশের মানুষ এখন মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্ধুব্ধ হয়ে উন্নয়নের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। তারা বলেন, কিন্তু একটি চিহ্নিত কুচক্রি মহল দেশের জনগণ ও নির্বাচনের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। রাজনীতির আড়ালে সক্রিয় উন্নয়ন ও প্রগতিবিরোধী এই অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশের সচেতন নাগরিকদের সোচ্চার হওয়া একান্ত প্রয়োজন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশের সকল নাগরিককে নিজেদের ভোটাধি কার প্রয়োগ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সফলভাবে সম্পন্ন করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এমিরেটাস অধ্যাপক আতিউর রহমান, সাবেক আইজিপি, সচিব ও কলামিস্ট মোহাম্মদ নুরুল হুদা, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ, বেসরকারিকরণ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান, সাবেক মুখ্য সচিব ও কবি ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী পিপিএম, সাবেক রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সাবেক আইজিপি ও রাষ্ট্রদূত ড. হাসান মাহমুদ খন্দকার, লেখক ও গবেষক শাহরিয়ার কবির, ঢাবি অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, সাবেক সচিব মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী বীর প্রতীক, লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর, এনডিসি, পিএসসি (অব:), লে. জেনারেল আবদুল ওয়াদুদ, এনডিইউ, পিএসসি (অব:), লে. জেনারেল সাব্বির আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, এনডিসি, পিএসসি (অব:), এয়ার ভাইস মার্শাল সাদে উদ্দিন (অব:), বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক সচিব ও সাবেক সদস্য উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হান্নান, তথ্য কমিশনের সাবেক সিনিয়র সচিব ও সদস্য সুরাইয়া বেগম, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মান্নান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রশিদ আসকারী, ঢাবি চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, মেজর জেনারেল আলাউদ্দিন মুহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, বিপি, এনডিসি, পিএসসি (অব:), মেজর জেনারেল শিকদার মো. সাহাবুদ্দিন (অব:), মেজর জেনারেল মো. আবদুর রশিদ, পিএসসি, জি (অব:), মেজর জেনারেল নাসির উদ্দিন (অব:), এমপি, মেজর জেনারেল মো. সালাহউদ্দিন মিয়াজী, পিএসসি (অব:), মেজর জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদ-উল-ইসলাম, বিএসপি, এনডিইউ, পিএসসি (অব:), রিয়ার এডমিরাল এ কে এম আজাদ (অব:), জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাবেক সচিব অপরূপ চৌধুরী, সাবেক সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব অশোক মাধব রায়, সাবেক রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম মোহাম্মদ, সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক, সাবেক রাষ্ট্রদূত চৌধুরী ইখতিয়ার মমিন, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত এটিএম নজরুল ইসলাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান, সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম এনডিসি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য জেসমিন আরা বেগম, সাবেক রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম, সাবেক সচিব ড. সেলিনা আফরোজ, সাবেক সচিব পবন চৌধুরী, সাবেক সচিব ড. খন্দকার শওকত হোসাইন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, সাবেক প্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম শামীম চৌধুরী, সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন মিয়া, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি মো. আবুল কাশেম হাওলাদার, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি এম সানাউল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, ঢাবি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার, অধ্যাপক ডা. বরেন চক্রবর্তী, অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. আলী ইমাম চৌধুরী, বিপিএম, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওয়ালিউর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক এআইজি মালিক খসরু, সাবেক সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান, সাবেক সচিব আফরোজা খানম, সাবেক সচিব মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ নুরুল হুদা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রকিবুর রহমান, বিপি (অব:), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফ আহমেদ খান (অব:), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আনিস জামান (অব:), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সিরাজুল ইসলাম শিকদার, এনডিসি, পিএসসি (অব:), কমোডর এ ডব্লিউ চৌধুরী (অব:), ঢাবি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও লেখক ড. মাসুদুজ্জামান।
সারাবাংলা/আইই/ইআ