‘জনগণ পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দেবে, সংঘাত হলে রেহাই নাই’
২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে যে দলের যত প্রার্থী আছে তারা জনসংযোগ করুক স্বাধীনভাবে। জনগণকে সুযোগ দিন তার পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার। তাতে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে। তিনি বলেন, আমাদের নৌকার প্রার্থীও আছেন, স্বতন্ত্র আছেন এবং অন্যান্য দলও আছে। প্রত্যেকে জনগণের কাছে যাবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সেই নির্বাচিত হবে। কেউ কারও অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। কোনোরকম সংঘাত-মারামারি দেখতে চাই না। আমাদের দলেরও যদি কেউ করে তাদের কিন্তু রেহাই নাই।
বৃহস্পতিবার (২১ডিসেম্বর) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৫ জেলার নির্বাচনি জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। শেখ হাসিনা এদিন রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট, রাজশাহী বিভাগের নাটোর ও পাবনা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেন। ওই জেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলা, থানা, পৌর আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা এবং সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর নির্বাচনি এলাকার নৌকার প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোট চুরির অভিযোগ খালেদা জিয়াকে দুই বার ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণকে ভোটের অধিকার দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আর সেটা অব্যাহত থাকবে। এবারের নির্বাচনে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ করে কেউ যেন কোন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। সেদিকে সকলকে সজাগ থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দেবে। ভোটের মালিক জনগণ। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। হ্যাঁ, আমরা এটা উন্মুক্ত করেছি। আমরা চাই জনগণ তার ভোটের অধিকার নির্বিঘ্নে প্রয়োগ করবে। তারা যাকে খুশি তাকে পছন্দ করবে, ভোট দেবে, সেই জয়ী হয়ে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রকে আমাদের আরও সুদৃঢ় করতে হবে। এর যদি ব্যতয় ঘটে ভবিষ্যতে কি হবে? বাংলাদেশ শেষ হয়ে যাবে। আজকে যতটুকু উন্নতি করেছি, থাকবে না।’ আওয়ামী লীগ সরকারের টানা মেয়াদে দারিদ্র্যর হার বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও আর্থ-সামাজিক খাতে নানামুখী অগ্রগতি তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আওয়ামী লীগকেই সরকার গঠন করে জনগণের কল্যাণ সাধন করতে হবে বলেও নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন তিনি শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ যেন কোনো অভিযোগ না আনতে পারে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। ভোটারের অংশগ্রহণ থাকতে হবে। কোন দল আসল না আসল তাতে কিছু আসে যায় না। আর এরা (বিএনপি) তো আসবেই না। ভোট চুরির সুযোগ পাবে না দেখে আসে না। কারণ ২০০৮ সালে পারে নাই। যার জন্য এখন সংসদ নির্বাচন বাতিল করতে চায়, বর্জন করতে চায়। সেটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু আমরা নির্বাচনে বিশ্বাস করি। জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। কারণ, জনগণের ক্ষমতায়ন আমরাই নিশ্চিত করেছি। আর সেটা ধরেই আমাদের এগুতো হবে।’
এদিন তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রান্তে সভা পরিচালনা করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফদরর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০ ডিসেম্বর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি জনসভা শুরু করে আওয়ামী লীগ। সেই ধারাবাহিকতায় আজ পাঁচটি জেলার ভার্চুয়াল জনসভায় যোগ দিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম