‘অসহযোগের প্রথম দিনেই জনগণ জানান দিয়েছে, তারা সরকারের পক্ষে নাই’
২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫১
ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনেই জনগণ জানান দিয়েছে, তারা এই স্বৈরাচার সরকারের পক্ষে নাই।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর সরকার চরম জুলুম-নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রকে কব্জায় নিয়েছে। জনগণকে ত্যাজ্য করেছে। তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীর ওপর জুলুম, নির্যাতন, হামলা, মামলা ও নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। বিশেষ করে কেরানীগঞ্জ কারাগারে বন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে। নেতাকর্মীদের আত্মীয়-স্বজন দেখা করতে এলে তারা যে নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছেন, তা মানুষের হৃদয়কে নাড়া দিচ্ছে। সরকার এ ধরনের কাজ করে বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দলকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা নির্বাচনি মাঠ একপাক্ষিক করার জন্য কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে ভয় দেখানো, মিথ্যা মামলা দেওয়া, নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে সেগুলোর মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম ঢোকানো, কারাগারে অসুস্থ নেতাকর্মীদেরকে চিকিৎসা না দিয়ে মেরে ফেলা, মিছিলে আওয়ামী লীগের ক্যাডার লেলিয়ে দিয়ে মেরে ফেলা, পুলিশকে দিয়ে গুলি করে হত্যা করা— এগুলো প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে, কোনো সাজানো গল্প নয়।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ এবং তাদের নেতাদের যে বক্তব্য ও আচরণ, তা আদিম সমাজের মানুষের মতো।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত। সেই আদালত এখন আওয়ামী পাড়ায়, আওয়ামী খেলাঘরে পরিণত হয়েছে। এটি জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’
রিজভী বলেন, ‘প্রতিদিনই পরিকল্পিতভাবে নাশকতা করছে আওয়ামী লীগ, আর নাম দিচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। কিন্তু ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের মতো যেখানেই নাশকতা হয়েছে সেখানে প্রথম ধরা পড়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বা যুবলীগ-ছাত্রলীগ। ২০১৫ সালে যখন নাশকতা করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম দেওয়া হয়েছিল, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন বলেছিল যে ঘটনা ঘটাই আমরা আর নাম হয় বিএনপির! এগুলোর সব তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
আওয়ামী লীগ অস্ত্র সংগ্রহ করছে বিএনপির কর্মসূচি মধ্যে আক্রমণ করার জন্য— এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই যে আওয়ামী নেতার মাইক্রোবাসে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ধরা পড়েছে র্যাবের কাছে, প্রথমে কিন্তু র্যাব বুঝতে পারেনি, পরে বুঝতে পেরেছে। এর উত্তর কী দেবেন হাছান মাহমুদ সাহেবরা? এগুলোর উত্তর নাই বলেই এখন ব্যক্তিগত আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষা কত নির্মম-নির্দয় হতে পারে, তা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি। তারা আওয়ামী লীগের স্টাফ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর কাছ থেকে দর্শন নিয়ে তারা বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর