যশোর-৫: নৌকা-স্বতন্ত্রের হামলা-ভাঙচুরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:৩১
যশোর: প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনি প্রচার শুরু হতে না হতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যশোর-৫ (মণিরামপুর) সংসদীয় আসন। নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হামলা, ভাঙচুর ও পাল্টাপাল্টি হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন যশোর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াকুব আলী। তিনি অভিযোগ করেন, গত চার দিনে ছয়টি ঘটনায় তার অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সর্বশেষ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার কাশিমপুর এলাকায় তার গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের পাশাপাশি কয়েকটি মোটরসাইকেল ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আটজন।
ইয়াকুব আলীর অভিযোগ, এসব হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বপন ভট্টাচার্যের ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য ও তার ভাগনে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্ত্তী বাচ্চু্। এ ছাড়া নির্বাচন ঘিরে তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান আওয়ামী লীগ নেতা জি এম মজিদসহ বেশ কয়েকজনকে প্রকাশ্যে বিভিন্ন সমাবেশে নৌকার কর্মীরা হুমকি দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। নির্বাচন সামনে রেখে উপজেলায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থি সংগঠনের ক্যাডারদের আনাগোনা বেড়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী বলেন, প্রতিটি জায়গায় হামলার শিকার হলে ঘটনাস্থলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান আলী উপস্থিত হচ্ছেন। সেখানে গিয়ে নৌকার সমর্থকদের জরিমানা না করে উল্টো যারা মার খাচ্ছে তাদেরকেই জরিমানা করছেন। এরই মধ্যে তিনি ঈগল প্রতীকের একাধিক নেতাকর্মীকে জরিমানা করেছেন। হাসান আলী দায়িত্বে থাকলে সুষ্ঠু ভোট হবে না উল্লেখ করে তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরেই মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন যশোর-৫ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আমি সরকারি সুযোগ-সুবিধা না নিয়েই ভোট করছি। নির্বাচনের সব নীতিমালা মেনেই কাজ করছি।
প্রশাসন তার নেতাকর্মীদেরও জরিমানা করে উল্লেখ করে নৌকার এই প্রার্থী বলেন, আমাদেরও প্রশাসন ছাড় দেয়নি। বিজয় দিবসের র্যালিতেও আমাদের জরিমানা করা হয়েছে। প্রশাসন এত দুর্বল নয় যে আমার অনুকূল্য মেনেই কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন খুবই কঠোর। নিরক্ষেপভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ মনগড়া। যারা আচারণবিধি লঙ্ঘন করছে, তাদেরই জরিমানা করা হয়েছে। কে কোন দলের, সেটি বিবেচনা করা হয়নি। তার অভিযোগ মিথ্যা।’
জানতে চাইলে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এখন পর্যন্ত কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে বেশ কয়েকজনকে জরিমানা ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিটি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। যে অপরাধ করবে, তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
সারাবাংলা/টিআর
আচরণবিধি লঙ্ঘন নির্বাচনি প্রচার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ যশোর-৫ স্বপন ভট্টাচার্য