ভরা মৌসুমেও সবজির বাজার চড়া
২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:৫০
ঢাকা: প্রকৃতিতে এখন শীতকাল বিরাজ করছে। শীতকালের এই সময়টায় বছরের অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বাজারে কম দামে বেশি শাক-সবজিপাওয়া যায়। তবে চলতি শীতে শাকসবজির দাম না কমে বরং কিছু কিছু সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঁচা বাজারে এসে ক্রেতারা হা-হুতাশ করলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি বৈরী আবহাওয়া ও অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে দাম কমেছে না শীতের সবজির।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজার, শ্যামলী, কল্যাণপুর এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিন আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারে শাক সবজি কিনতে আসা রাসেল মিয়া নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখন শীতের ভরা মৌসুম চলছে। এ সময়ে শাকসবজির দাম কম থাকার কথা। কিন্তু দাম না কমে বরং কয়েকটি সবজির দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে ফুলকপি কিনেছি ৫০ টাকায় আজ তা ৬০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। নতুন আলুর দামও কমেনি।’ তাহলে দাম কখন কমবে বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
একই বাজারের সবজি বিক্রেতা রুহুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ সপ্তাহে কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে পাইকারিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি প্রতি বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার শীতের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ অনেক শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। তাই এখনও বাজারে শীতের সবজির দাম কমছে না।’
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের সবজি বিক্রেতা সজল মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন আলু গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ৬৫-৭০ টাকা করে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে ৬০ টাকা করে বিক্রি করেছি। ৬০ টাকা কেজি দরের সিম ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এ ছাড়া দাম বেড়েছে ফুলকপি ও বাঁধাকপির ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে মাঝারি সাইজের প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি করছি।’
গত সপ্তাহে পোল্ট্রি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, সোনালি মুরগির ৩১০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আগারগাঁওয়ের বিএনপি বাজারের পোল্ট্রি মুরগির বিক্রেতা সুমন মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত সপ্তাহের চেয়ে চলতি সপ্তাহে কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেড়েছে। আজ পোল্ট্রি ১৯০-২০০ এবং সোনালিকা মুরগি ৩১০-৩২০ কেজি দরে বিক্রি করছি। তবে ডিমের বাজার গত সপ্তাহের মতোই আছে। ব্রয়লার মুরগির ডিম ১৩০ টাকা ডজন এবং হাঁসের ডিম ২১০ টাকা। আর কোয়েল পাখির ডিম ৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিন গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬২০-৬৫০ টাকা এবং খাসি ১০৫০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
শ্যামলীর কাঁচা বাজারের গরুর মাংস বিক্রিতা মোহাম্মদ তৌফিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ গরুর মাংস ৬২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আজ দুটি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে।’
অন্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা লাভ কম করি। সব সময় সঠিক ওজনে কিছুটা কম দামে মাংস বিক্রি করি।’
এদিন মাছের বাজারও গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে। এক কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের রুই মাছ ৩৫০-৩৮০ টাকা কেজি, পাঙাস ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, কৈ ২৫০-২৬০ পাবদা ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ২৫০-২৬০ টাকা কেজি, সিলভার কার্প ১৬০-১৮০ টাকা, সিং ৬৫০ টাকা, গুলশা ৭০০টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০-৮০০ কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
আগারগাঁওয়ের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ সাঈদ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কম। পাঙ্গাস, সিলভার কার্প, রুইসহ কয়েক জাতের মাছের দাম ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।’
এদিন ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা রসুন ২৪০-২৫০ টাকা, আদা ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে সব ধরনের শাক-সবজির দাম বাজারভেদে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কম বেশি হতে পারে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে