Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কে জিতবে-কে বিরোধী দল হবে ভোটের আগেই ঠিকঠাক’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:২৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো : দেশবাসীকে ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, ‘নির্বাচনে কে জিতবে আর কে বিরোধী দল হবে সেটি ভোটের আগেই ঠিকঠাক হয়ে গেছে। আপনারা ভোট দিলেও আওয়ামী লীগ জিতবে, ভোট না দিলেও আওয়ামী লীগ জিতবে। ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো আরেকটি তামাশার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সুতরাং ভোট বর্জন করে আসুন, আমরা লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করি।’

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর হাজারী লেইনের দলীয় কার্যালয়ে সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা শাখার কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুঁশিয়ার করে সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘সিপিবি কোনো হুকুমদার পার্টি নয়। কিন্তু আপনাকে গণতান্ত্রিকভাবে ফোরামে নেওয়া সিদ্ধান্ত মানতে হবে। ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। চুপি চুপিও যদি কেউ ভোটকেন্দ্রে যান, সাংগঠনিকভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলে দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গেছে, সিপিবি তার বিরুদ্ধ বিকল্প শক্তি সমাবেশ করার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। আমাদের সেই আন্দোলন জোরদার করতে হবে।’

মেনন-ইনু-সাকী-সাইফুল বাম রাজনীতিকে দুর্বল করেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা ১১ দল করেছিলাম। সেখান থেকে বেরিয়ে মেনন-ইনুরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভিড়ে গেলেন। তারা ১৪ দল করলেন। ১১ দল ভেঙে গেল। আজ মেনন-ইনুদের রাজনীতিই হারিয়ে গেছে। একটা সিটের জন্য শেখ হাসিনার কাছে হায়রে কান্নাকাটি! তাদের আহাজারিই প্রমাণ করে, তাদের এখন কোনো অবস্থান নেই। আর দু’জন আছেন সাইফুল হক আর জোনায়েদ সাকী। তারা আমাদের সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোটে ছিলেন। কিন্তু এ টু জেড ইউনিটি তত্ত্ব দিয়ে তারা চলে গেলেন বিএনপির সঙ্গে।’

‘বিএনপি এখন বলছে নির্বাচনের পর তারা আবার জামায়াতের সঙ্গে জোট করে আন্দোলন করবে। জামায়াতকে দিয়ে কী গণতান্ত্রিক আন্দোলন হবে? জামায়াত তো গণতান্ত্রিক দল নয়, ওয়ার ক্রিমিনালদের দল, কেউ তাদের বিরোধিতা করলে তারা হাত ভেঙে দেয়, রগ কেটে দেয়। বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে মিলে গেলে সাইফুল আর সাকীদের কী হবে? তাদের রাজনীতি কোথায়? এই মেনন-ইনু, সাকী-সাইফুলরা বাংলাদেশের বাম রাজনীতিকে দুর্বল করেছেন।’

বাংলাদেশকে ভূ-রাজনীতির অংশ করে ফেলা হয়েছে মন্তব্য করে শাহআলম বলেন, ‘২০০৪ সালে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী উলফার জন্য দশ ট্রাক অস্ত্র আনা হয়েছিল। তারেক রহমান এবং বিএনপি এর মধ্য দিয়ে দেশকে ভূ-রাজনীতির অংশ করে ফেলে। এর থেকে আমরা আর বের হতে পারিনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এখন ভূ-রাজনীতিকে ব্যবহার করছে। অবস্থা এমন হয়েছে, আওয়ামী লীগের পাশে আছে ভারত, চীন আর রাশিয়া। আমেরিকাসহ পশ্চিমা শক্তি আছে বিএনপির পাশে। রাজনীতি চলে গেছে বাইরের দেশের হাতে আর নির্বাচন চলে গেছে প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আমরাই ৮৯ সালে স্লোগান দিয়েছিলাম- আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। সিপিবির এই স্লোগান সারাদেশের মানুষ লুফে নিয়েছিল। সেভাবে আমাদের মাঠে নামতে হবে। প্রত্যেক নেতাকর্মীকে যার যার অবস্থান থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে শরিক হতে হবে। আন্দোলনে নামলে আঘাত আসবে, মাথা ফাটবে, মামলা হবে। সেটা মাথায় রেখেই নামতে হবে। আবার সিপিবির প্রতীক কাস্তে নিয়ে ভবিষ্যতে নির্বাচনের মাঠেও যেতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার থেকে সংসদ সদস্য পর্যন্ত সকল নির্বাচনেও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, কিন্তু প্রতীক হবে শুধুই কাস্তে।’

জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় কর্মিসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মছিউদ্দৌলা, দক্ষিণ জেলার সভাপতি কানাই লাল দাশ ও সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী।

সারাবাংলা/আরডি/একে

চট্টগ্রাম টপ নিউজ নির্বাচন সিপিবি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর