ফারমার্স ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ
১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৪:৪১
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : ব্যাংক পরিচালনায় ব্যর্থতার দায়ে বেসরকারি খাতের দ্য ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী মঙ্গলবার এমডিকে অপসারণের চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,মঙ্গলবার সকালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চিঠি গ্রহণ করেছে। আজ থেকেই এই অপসারণ কার্যকর হয়েছে। এমডির চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৮ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য গত ৬ ডিসেম্বর এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের এমডি দেওয়ান মুজিবর রহমান, গত বছরের ৩০ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদ এবং ২০১৪ সালের ২৫ মে বেসিক ব্যাংকের এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ আজ ফারমার্স ব্যাংকের এমডি এ কে এম শামীমকে অপসারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্র জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থায়ী কমিটিতে ফারমার্স ব্যাংকের এমডিকে ডাকা হয়। সেখানে তাকে ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে সহায়তা করার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তাকে এমডি পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর এ কে এম শামীমকে অপসারণে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্থায়ী কমিটিতে তলব করা হয়।
সূত্র জানায়, তারল্য সংকটের কারণে নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্ধারিত অর্থ টাকা জমা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিল ব্যাংকটি। এ ছাড়া গ্রাহকরা চেক দিয়েও ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারছিল না। এসব কারণে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কেন অপসারণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ব্যাংকটিতে রাখা তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ আমানত সুদাসলে তুলতে গেলে কয়েক দফায় চেক ডিজঅনার হওয়ার ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে ২৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ ছাড়েন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একই সময়ে অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনুমোদন পাওয়া নতুন ৯ ব্যাংকের একটি ফারমার্স ব্যাংক। ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু পরই ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাংকটি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে ব্যাংকটির প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম ধরা পড়ে।
গত সেপ্টেম্বর শেষে ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশই খেলাপি। শীর্ষ ১০ খেলাপি গ্রাহকের কাছেই ব্যাংকটির পাওনা ১৩৪ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/একে