Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মানুষ পুড়িয়ে ফায়দা লুটবে, এটি বাংলার মাটিতে চলবে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৭

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,আমাদের দেশেও কিছু মানুষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অগ্নিসংযোগ করে মানুষকে হত্যা করে। মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে, এটি বাংলার মাটিতে চলবে না।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে গণভবন প্রাঙ্গণে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বড় দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং সেইভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাই জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও মাঝখানে অনেক বাধা এসেছে বিপত্তি এসেছে। কিন্তু যখনে থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে তখন থেকে এই নীতিই আমরা মেনে চলছি। স্বাধীনভাবে সব ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। সেজন্য আমি বলেছি ধর্ম যার যার উৎসব সকলের।’ সেভাবেই আমরা উৎসব আয়োজন করি বলে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের ক্ষতি করা এটি কখনোই কাম্য না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধর্মীয় সংঘাত হোক, সেটি আমরা চাই না। ধর্ম পালনে কেউ বাধার সৃষ্টি করুক সেটিও চাই না। যার যার বিশ্বাস নিয়ে তারা চলবে। সেটিই আমরা চাই, সেটি করতে চাই।’

ঈদ বলেন, দুর্গাপূজা বলেন, বড়দিন বলেন বৌদ্ধ পূর্ণিমা বলেন, আমরা কিন্তু সব একসঙ্গে পালন করছি। প্রত্যেকেই উৎসব ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। প্রত্যেকের আনন্দের দিন কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। শুধু আমার ধর্মের আনন্দ আমি পাব তা না? আমরা সকল ধর্মের আনন্দের দিন পাচ্ছি আর সবাই উৎসবে মেতে উঠছি। এটিই তো সব থেকে বড় পাওয়া। এটিই তো সব থেকে আনন্দের। আনন্দটি আমরা ভাগাভাগি করে নিই। সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিই বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘যিশু খ্রিষ্টের জন্মস্থান যে প্যালেস্টাইন সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। এটি আমাদের জন্য সত্যি খুব দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যখন যেখানে সুযোগ পাচ্ছি সেখানে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দুভার্গ্য যে, আমাদের দেশেও কিছু মানুষ তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য অগ্নিসংযোগ করে মানুষকে হত্যা করে। রেল লাইনের ফিশ প্লেট খুলে দেয় কেন? রেলের বগি পড়ে যায় আর মানুষ নিহত হবে এটি কোন ধরনের রাজনীতি? আমার কাছে অবাক লাগে।’

‘জীবন্ত মানুষদের পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, আগুন দিয়ে খেলা এটি কেন? রাজনীতি হবে আদর্শ নিয়ে। নিজের যদি কর্মসূচি থাকে জনগণের কাছে যাবে।’ জনগণের কাছে বলার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ট্রেনে আগুন দিয়েছে। একটি মা তার সন্তানকে বুকে ধরে পুড়ে ওখানে মারা গেছে। এই ধরনের করুণ দৃশ্য তো আমরা দেখতে চাই না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মানুষ পুড়িয়ে মেরে মানুষের ক্ষতি করে কী অর্জন করছে? সেটিই আমার প্রশ্ন? এই ধরনের সংঘাত বন্ধ হোক, আমরা সেটিই চাই।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মানুষের কাছে যেতে হবে মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষের উন্নয়নের কথা বলে। মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারব সেই কথা বলে। কিন্তু মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বন্ধ করে ফায়দা লুটবে, এটা বাংলার মাটিতে চলবে না।’

এই ধরনের ঘটনার হুকুমদাতাসহ যারা এই ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছে তাদের প্রতি ধিক্কার জানান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এইভাবে জীবন্ত মানুষ পোড়ানো মহাপাপ। এটি অন্যায়। এই অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। কোনো ধর্মই এটি মেনে নেয়নি।’

বিজ্ঞাপন

সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবতার ধর্ম হচ্ছে সবথেকে বড় ধর্ম। মানবের কল্যাণ সাধন করা এটিই হচ্ছে সকল ধর্মের শিক্ষা। কাজেই সেই শিক্ষা নিয়ে আমরা এই দেশ পরিচালনা করি। এই মাটি সকলের জন্য। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে বাস করবে। সবার কল্যাণ হবে। সবার উন্নয়ন হবে সেটিই আমরা কামনা করি।’

২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তুলে এদেশের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনমান উন্নত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

গণভবনে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিভিন্নস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী বড়দিন উদযাপন শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর