ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা আর মামুদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
রোববার ( ২৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে ভোটার সচেতনতা ও নাগরিক সক্রিয়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোটবিডি ওয়েবসাইট সম্পর্কিত অবহিতকরণ সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে মূল্যায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি না এটা কোনো নির্বাচন। কারণ নির্বাচন হলো বিকল্প থেকে বেছে নেওয়া। যদি বিকল্প না থাকে তাহলে তো নির্বাচন হয় না। নির্বাচন নির্বাচন খেলা হতে পারে। নির্বাচন হতে হলে যথার্থ বিকল্প থাকতে হবে এবং অনিশ্চয়তা থাকতে হবে। এখনকার নির্বাচনে কি অনিশ্চয়তা আছে?
তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্বাচন যেটা আমরা বলি- আওয়ামী লীগ ও বিএনপি হচ্ছে দুটো ব্র্যান্ড। বিএনপি যদি না থাকে, এটা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায় যে আওয়ামী লীগ চাইলে সব আসনে জিততে পারে। এখন তারা অন্যদের কিছু সিট দেওয়ার জন্য আসন ভাগাভাগি করছে এবং প্রতিযোগিতা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে। নিজেদের অনুগত, নিজেদের সৃষ্ট নামসর্বস্ব দলগুলোর সঙ্গে।
একমাত্র বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি। জাতীয় পার্টির মহাসচিবও বলেছেন যে, জাতীয় পার্টি দ্বারা মনোনীত, আওয়ামী লীগ সমর্থিত। তাহলে তো প্রতিযোগিতা যেটা হচ্ছে আমরা আর মামুদের মধ্যে। এটা নির্বাচনের কোনো সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে না। ব্যাকরণেই এটাকে নির্বাচন বলা চলে না।
তিনি আরও বলেন, আমার যেটা বিশ্লেষণ- এটা ভোটের একটা খেলা। ভোটের খেলা হচ্ছে। গত দুটি বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে। যার ফলে সরকারের যে লেজিটেমেসি সমস্যা, তা কিন্তু দূরীভূত হবে না। বরং আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। কারণ এখন কিন্তু আমাদের নির্বাচনের উপর অনেকের চোখ আছে। অতীতে কিন্তু সেই চোখ ছিল না। এই লেজিটেমেসির সমস্যায় বিদেশি বন্ধুদের উপর আমাদের আরও নির্ভরশীল হতে হবে। এতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে যে, আইন তাতে বলা আছে রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন নাম প্রস্তাব করবে। কিন্তু যখন অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছিল তখন সেটি উন্মুক্ত করে দিয়েছিল। সুতরাং, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এই নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনের আইনগত বৈধতা যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে তো তার সব কার্যক্রম, তফসিল ঘোষণা এবং নির্বাচন আইনগতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য।