Saturday 08 Nov 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের শঙ্কা, ঠেকাতে প্রস্তুত প্রশাসন

ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:২৫ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৮

কক্সবাজার: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্বার্থন্বেষী মহল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নির্বাচনের মিছিল-মিটিং ও জনসভায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করা হবে। তবে বিষয়টি মাথায় রেখে আগে থেকেই প্রস্তুত প্রশাসন। কেউ তাদের ব্যবহার করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

নির্বাচনের রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের অভিযোগ অনেক পুরোনো। রোহিঙ্গাদের আশ্রিত জীবনের সুযোগ নিয়ে প্রলোভনে ফেলে নানা অপকর্ম ব্যবহার করছে স্বার্থন্বেষীরা। তবে ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা বলছেন, বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়ে ঋণী করেছে। এর মধ্যে এই দেশের নির্বাচনে জড়ানো তাদের কোনভাবেই উচিৎ হবে না। এই কাজে তাদের যেন কেউই ব্যবহারের চেষ্টা না করে।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান। নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করা আইনিভাবে অবৈধ। যারা এই কাজে রোহিঙ্গাদের জড়ানোর চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, এই ব্যবহার থামানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের আব্দুর রশিদ বলেন, ‘প্রাণ বাঁচানোর জন্য মিয়ানমার থেকে এই দেশে পালিয়ে এসেছি। এই দেশ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। তাদের মানবতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সুতরাং এই দেশে বিশৃংখলা হয় এমন কোন কাজে আমরা জড়াতে পারব না। পাশাপাশি আমাদের যেন কেউ এই কাজে ব্যবহার না করে।’

বালুখালী ক্যাম্পের হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা, আমরা এই দেশের নাগরিক নই। সুতরাং এই দেশের নির্বাচনের মিছিল-মিটিংয়ে যাওয়া আমাদের উচিৎ নয়। কেউ যেন টাকার বিনিময়ে এই কাজে না যায়। এছাড়া রোহিঙ্গাদেরও যেন কেউ ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে প্রশাসনের।’

কুতুপালং ক্যাম্পসংলগ্ন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন (৯ নং ওয়ার্ড) বলেন, ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে নির্বাচন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের আশংকা রয়েছে। এই কাজে না জড়ানোর জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রচেষ্টা ও প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের হস্তক্ষেপও জরুরি।’

কক্সবাজার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। ক্যাম্পের ভেতরে-বাইরের তল্লাশি চৌকি বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচনের দিন কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন। যেন আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পেই অবস্থান করে।’

নির্বাচনে রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের আশঙ্কার কথা স্বীকার করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, ‘এক মাস আগে থেকেই নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনভাবেই যেন রোহিঙ্গাদের, এই কাজে জড়ানো না হয় সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্বাচন মৌসুমে রোহিঙ্গাদের ব্যস্ত রাখতে নেওয়া হয়েছে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। নির্বাচনের দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলবে।’

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান জানান, রোহিঙ্গারা এই দেশে আশ্রিত। সুতরাং যারাই রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করার উদ্যোগ নেবে, যথাযথ প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এমও