Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন: বিআইডিএস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৩৭

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ এবং এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন। যেমন ধর্ষিতা মা-বোনের হিসাব বলা হয় ২ লাখ। কিন্তু এটি আসলে হবে প্রায় ৬ লাখ। এ বিষয়ে তেমন কোনো গবেষণাই হয়নি। সেই সঙ্গে এক কোটি শরণার্থীর যে অবর্ণনীয় কষ্ট ও দুঃখের জীবন ছিল। তাদের অনাহারে-অর্ধাহারে মৃত্যু ও বর্ণনা নিয়েও তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। তারাও তো মুক্তিযুদ্ধের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সেমিনারে বক্তারা এমন তাগিদ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও এ বিআইডিএস সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বিআইডিএসের মহাচরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: স্মৃতিতে ও ইতিহাস’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবদ্ধ উপস্থাপন করেন লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর বিক্রম। অতিথি ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক, লেখক ও শিক্ষক তানভীর মোকাম্মেল।

সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘আমাদের দেশে ইতিহাস চর্চার অভাব আছে। মুক্তিযুদ্ধ সব ঘরে নেই। মুক্তিযুদ্ধ পণ্য হিসেবেই ব্যবহার হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯ মাসে প্রায় ৬ লাখ মা বোনকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি কোনো সৈনিকের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলাও হয়নি। এক্ষেত্রে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ধর্ষণের অনুমতি ছিল। পরবর্তীতে যারা মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা করেছেন এবং ইতিহাস লিখেছেন তারা যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছিলেন না। এ জন্য সঠিক অনেক ইতিহাস এখনও উঠে আসেনি। মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় ১ হাজার ৬০১ জন সৈন্য শহীদ হয়েছেন। নিখোঁজ ধরলে ১ হাজার ৬৭৮ জন হবে। তাদের আমরা সম্মান দিয়েছি। ফলে বাঙালিকে কেউ অকৃজ্ঞ জাতি বললে পারবে না। ধর্ষিত নারীদের বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা দরকার।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি কারাগারে বন্দী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার এবং বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ‘সেই সময় যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন তারা কোনো কিছু পাওয়ার আশায় যাননি। শুধু দেশকে ভালোবেসে আল্লাহর ওয়াস্তে যুদ্ধে গেছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনেক চাওয়া তৈরি হয় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধা দেওয়াটা ঠিক আছে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সন্তানরাও যে সুবিধা নিচ্ছেন সেটি ঠিক নয়।’

তানভীর মোকাম্মেল মুক্তিযুদ্ধ সময়ের বিভিন্ন ভিডিও চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা ধর্ষণের ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার। তবে আমি কিছুটা চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা পরিবার, সমাজ ও পারিপার্শ্বিক চাপের কারণে কথা বলতে পারছেন না। ধর্ষিত নারীরা অনেকেই ওই সময় পরিবার এমনকি গ্রাম থেকেও বিতাড়িত হয়েছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও কোন দেশ থেকে প্রাণ ভয়ে এক কোটি মানুষ অন্য দেশে চলে যাননি। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন এক কোটি মানুষ। তাদের জীবনের অবর্ণনীয় দুঃখ, কষ্ট, বর্ণনার ইতিহাস খুব বেশি আলোচিত হয় না। এ অংশটি নিয়ে গবেষণা দরকার।’

ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় শুধু সংখ্যালঘুরাই নয়, দেখা যায় সব ধর্মের মানুষই হত্যা, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কাউকেই বাদ দেওয়া হয়নি। ওই সময়ের রাজনৈতিক ইতিহাস জানা গেলেও সাধারণ মানুষের যে ত্যাগ, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ তাদের ইতিহাস খুব বেশি উঠে আসেনি। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে এ বিষয়ে গবেষণা দরকার। আমরা গবেষণা প্রতিষ্ঠান। অর্থনীতি নিয়ে কাজ করি। কিন্তু ইতিহাসের বিষয়ে আমাদের আপসের সুযোগ নেই।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

টপ নিউজ বিআইডিএস মুক্তিযুদ্ধ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর