Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ মাসে বিএনপির সাড়ে ২৩ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার: আইনজীবী ফোরাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:২৪

ঢাকা: চলতি বছরের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২৩ হাজার ৪৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময়ে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৮৪টি মামলা হয়েছে। আর গত ১৬ সপ্তাহে এক হাজার ৪৮২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এই তথ্য জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি শেখ হাসিনার পদত্যাগ ডামি নির্বাচন বর্জন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ, সমস্ত জেলা আদালত, সেশন আদালত, মুখ্য মহানগর হাকিমদের আদালত, মূখ্য জুডিসিয়াল আদালতসহ সমস্ত আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সেই লক্ষ্যে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ সকল বিচারকদের কাছে আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তের চিঠি হস্তান্তর করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যদা, সামাজিক সুবিচার’- এই তিনটি মহালক্ষ্যে নিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং এক সাগর রক্তের বিনিময় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা অর্জন করেছিলাম কাঙ্ক্ষিত বিজয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাত্র তিন বছরের মাথায় বাংলাদেশের জনগণের আজীবনের স্বপ্ন গণতন্ত্র, স্বাধীন বিচার বিভাগ, জনগণের চিন্তা ও বাক স্বাধীনতা এবং সংগঠন করার যে অধিকার সেই অধিকারগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা যা বাকশাল নামে কুখ্যাতি অর্জন করেছিল। শুধু একদলীয় নয় মূলত এক ব্যক্তি রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক বনে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫২ বছর শেষে অবৈধ, বিনা ভোটে, নিশি রাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকে নিকসকালো অন্ধকার বাকশাল-২ এ পরিণত করেছে।

আগামী ৭ জানুয়ারি সরকার আর একটি নীলনকশার পাতানো ডামি নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কথিত নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর জন্য সরকারি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী প্রার্থী, অনুগত প্রার্থী প্রভৃতি হরেক রকমের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কারা ডামি হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকবে তাও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে।

কায়সার কামাল বলেন, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকার রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে, হয় আজ্ঞাবহ করেছে, অথবা করায়ত্ব করতে না পেরে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে বিচার বিভাগ, সংবিধানের তৃতীয়ভাগে জনগণের মৌলিক অধিকার বিবৃত আছে এবং অনুচ্ছেদ ১০২ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ জনগণের মৌলিক অধিকার বলবৎ করার জন্য সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। বিশেষ করে অনুচ্ছেদ ৩১ অনুযায়ী। ২৮ অক্টোবরে বিএনপিসহ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র বিশ্বাসী সকল রাজনীতিক দলের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নাগরিকদের ওপর সরকারের পেটোয়া বাহিনী ক্রাকডাউন করল, তখন নেতাকর্মীদের আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার উপেক্ষিত হল। যা দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল আরও বলেন, আজ পর্যন্ত সরকার বিরোধী দলের গণতন্ত্রকামী ২৩ হাজার ৪৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে এবং মোট দায়ের করা হয়েছে ৬৮৪টি মামলা। আর গত ১৬ সপ্তাহে ১৪৮২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে দেশ ও জাতির এই চরম যুগ-সন্ধিক্ষণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর