ঢাকা: গণতন্ত্রী পার্টির এক অংশের সাত প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে অপর অংশের তিন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) করা আবেদনে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ‘নো অর্ডার’ আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়াও অপর অংশের তিন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে ইসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আশফাকুর রহমান। সাতজনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। অপর তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবীর আকন। আর ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আশফাকুর রহমান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রী পার্টি থেকে ১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাদের দলীয় প্রতীক কবুতর।
ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টির আরশ আলী ও শাহাদাত হোসেন নিজেদের দলের সভাপতি দাবি করছেন।
দুই পক্ষের দলীয় কোন্দলের কারণে ১২ ডিসেম্বর গণতন্ত্রী পার্টির সংসদ নির্বাচনের ১২ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি দেয় ইসি।
১২ ডিসেম্বরের এ সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে নির্দেশনা চেয়ে আরশ আলী মনোনীত সাতজন হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দলটির নিবন্ধন বাতিল ও আগ্রহী প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলে ইসির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ইসি আপিল বিভাগে আবেদন করে। ইসির এ আবেদনে গণতন্ত্রী পার্টির তিন প্রার্থী পক্ষভুক্ত হতে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেন।
আজ শুনানি শেষে চেম্বার আদালত সাত প্রার্থীর বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। আর ভিন্ন প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দেন।
নির্বাচনে আরশ আলী মনোনীত সাত প্রার্থী হলেন ভূপেন্দ্র চন্দ্র ভৌমিক (কিশোরগঞ্জ-১), মো. আশরাফ আলী (কিশোরগঞ্জ-২), দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া (কিশোরগঞ্জ-৩), মো. মোজাম্মেল হোসেন ভূঁইয়া (নীলফামারী-৩), মিহির রঞ্জন দাশ (সুনামগঞ্জ-২), মো. খায়রুল আলম (পাবনা-৩) ও মো. মতিউর রহমান (খুলনা-২)।
দলটির অপর অংশ মনোনীত তিন প্রার্থী হলেন শাহাদাত হোসেন (ঢাকা-৮), মঞ্জুরুল ইসলাম (বগুড়া-৪) ও হাফিজুর রহমান মিন্টু (ঢাকা-৫)।
এ বিষয়ে আইনজীবী আশফাকুর রহমান বলেন, গণতন্ত্রী পার্টির নিবন্ধন বহাল এবং রিট আবেদনকারী সাতজনকে নির্বাচনের অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আবেদন করে। তারা দলটির সভাপতি দাবি করা আরশ আলীর মনোনীত প্রার্থী। সাতজনের প্রার্থিতার বিষয়ে চেম্বার জজ আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। এর ফলে তাদের প্রার্থিতা বহাল থাকল। আর যে তিনজন পক্ষভুক্ত হয়ে নির্বাচনের অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছেন, তারা দলটির সভাপতি দাবি করা শাহাদাত হোসেনের মনোনীত প্রার্থী। আদালত তাদের প্রতীক বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে দুই পক্ষের ১০ প্রার্থী ‘কবুতর’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন।