Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নদভীর প্রচারে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা— অভিযোগ মোতালেবের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৩৩

নদভীর নির্বাচনি প্রচারে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর বিরুদ্ধে। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বুধবার সকালে নগরীর টেরিবাজার এলাকায় নৌকার প্রার্থী নদভীর পক্ষে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) বেশ কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রচারে অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন— অধ্যাপক মাহি উদ্দিন, আফজল আহমদ, রেজিস্ট্রার আক্তারুজ্জামান কাইছার, কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর ইফতেখার উদ্দিন, পরিচালক ফয়সাল, খোরশেদ আলী ও নাসির উদ্দিন।

উল্লেখ্য, কাপড় ও তৈরি পোশাক বিক্রির সহস্রাধিক প্রতিষ্ঠান আছে টেরিবাজারে। এখানে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম-১৫ আসন অর্থাৎ সাতকনিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা।

মোতালেবের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ডাক্তার আ ম ম মিনহাজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব মাইক্রোবাস ও ৩৫ আসনের একটি বাসে করে প্রতিদিন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাতকানিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। নদভী সাহেবকে ভোট দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির প্রলোভন দেখাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রকাশ্যে কোনো নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না।’

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নদভী নিজেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এই পদে থেকে বছরে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা সম্মানি পান।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনি প্রচারের বিষয়ে নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর বক্তব্য জানা যায়নি। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন, অভিযোগ নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠানো হবে।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। ‘জামায়াত ঘরানা’র নদভীকে দলে এনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রথম মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ, যিনি ‘মধ্যপ্রাচ্য লবি’র জন্য আগে থেকেই পরিচিত ও আলোচিত। ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার’ নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে দলে নিলেও দলটির পোড়খাওয়া অনেক নেতাকর্মীই তাকে মেনে নিতে পারেননি। একাংশের বিরোধিতার মধ্যেই নদভী ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ‍দুই দফায় সাংসদ নির্বাচিত হন।

গত ১০ বছরে সাংসদ হিসেবে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ‘জামায়াত তকমা’ ঘুচিয়ে এলাকায়-দলে প্রভাব-প্রতিপত্তি তৈরি করতে বিভিন্নসময়ে তার কর্মকাণ্ড বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ আছে, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত নিজের স্বজন ও অনুসারীদের তিনি আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যারা ছিলেন, তাদের কোণঠাসা করেছেন।

এর ফলে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকে পাশে নিয়ে গত দুই নির্বাচনে তিনি বৈতরণী পার হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নদভীকে ছেড়ে গেছেন। তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে।

সারাবাংলা/আইসি/টিআর

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম-১৫ টপ নিউজ নেজামউদ্দীন নদভী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর