‘তিস্তা প্রকল্পে ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় এগুতে হবে’
২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:২০
ঢাকা: তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের কাজ নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে আপত্তি এলে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত ২১ ডিসেম্বর জানিয়েছেন, এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তিস্তা নদী বিষয়ক কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। আসন্ন নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। তিস্তা নদীর উন্নয়নে চীন কাজ করতে আগ্রহী। আশা করছি যে, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চাইলে সেহেলী সাবরীন বলেন, চীন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে তারা সহযোগিতা করে আসছে। তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সহযোগিতা করার বিষয়েও চীন আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ বিবেচনা করে দেখবে।
চীন বলছে, নির্বাচনের পরে তিস্তা প্রকল্পে কাজ শুরু হবে। কিন্তু চীন যেখানে তিস্তার কাজ করবে তার থেকে শিলিগুড়ি করিডোর খুব দূরে নয়। শিলিগুড়ি করিডোরকে ভারত চিকেন নেক নামেও অভিহিত করে। দেশটি মনে করে তিস্তা উন্নয়নে কাজের নামে চীন চিকেন নেককে নিজেদের কব্জায় নিতে চায়। এ কারণে ভারত তার চিকেন নেকের সামনে চীনের উপস্থিতি দেখতে চায় না। এক্ষেত্রে তিস্তায় চীনের কাজ নিয়ে ভারতের আপত্তি কতটুকু আমলে নেওয়া হবে?
এমন প্রশ্নের উত্তর সেহেলী সাবরীন বলেন, আসলে পুরো প্রশ্নটি অনুমাননির্ভর। এমন অনুমাননির্ভর প্রশ্নের জবাব দেওয়াও সহজ নয়। তবে এ রকম কোনো প্রস্তাব ভারতের পক্ষ থেকে আসে, তখন ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব। সে অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ভাটি থেকে তিস্তা-যমুনার মিলনস্থল পর্যন্ত নদীর প্রস্থ কমিয়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিটারে সীমাবদ্ধ করা হবে। নদীর গভীরতা বাড়বে ১০ মিটার।
নদীশাসনের মাধ্যমে তিস্তা নদীকে সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি বহনক্ষমতা বাড়ানো, নদীর দুই পারে বিদ্যমান বাঁধ মেরামত করা, দুই পারে মোট ১০২ কিলোমিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ করা ইত্যাদি।
সারাবাংলা/জেআর/এনইউ