Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌকার ভোট চাইলেন এক বিএনপি নেতা, বহিষ্কার হলেন ৪ জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:২৭

রাজশাহী: রাজশাহী-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক। এ ঘটনায় মোজাম্মেলসহ চারজনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। বহিষ্কারের কারণ হিসেবে সরাসরি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বহিষ্কৃত চার নেতা হলেন— রাজশাহীর তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক খান, গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম এবং উপজেলার বাসুদেবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মানিক। এদের দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।

তবে জেলা বিএনপির দাবি, ভোট চাওয়া মোজাম্মেল ছাড়া বাকি তিনজনই নির্বাচন বর্জনের দাবিতে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি মাঠ পর্যায়ে নিয়মিতভাবে কাজ করছেন। তাই এই তিন নেতাকে বহিষ্কার করায় স্থানীয় নেতারা অসন্তোষ জানিয়েছেন।

গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম বলেন, কোনো ওয়ার্ড কমিটির নেতাকে বহিষ্কার করতে হলে ইউনিয়ন কমিটি সুপারিশ করে। ইউনিয়ন কমিটির কোনো নেতাকে বহিষ্কার করতে হলে উপজেলা কমিটির সুপারিশ লাগে। তবে গোদাগাড়ীর তিন নেতাকে বহিষ্কারের ক্ষেত্রে কোনোটিই মানা হয়নি। আমরা এই বহিষ্কারের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার বলেন, বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনায় আমরা বিব্রত। সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক খান নৌকার প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এটি ঠিকই আছে। তবে বাকি তিনজন বিএনপির দলীয় সব কার্যক্রমে নিয়মিতভাবে অংশ নিচ্ছেন। তারা কয়েকদিন থেকে বিএনপির চলমান কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে লিফলেটও বিতরণ করছেন।

বিশ্বনাথ সরকার আরও বলেন, ‘বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি। আমরা হোয়াটসঅ্যাপে রাজশাহী জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদলিপি লন্ডনে পাঠাব। আশা করি সেখান থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সংশোধন করা হবে।’ তা না হলে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির অনেক নেতাই পদত্যাগ করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিয়ে তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাম্মেল হক নৌকার ভোট চান।

ওই জনসভায় মোজাম্মেল হক বলেন, ‘যারা বিএনপির কর্মী-সর্মথক আছেন, তাদের কাছে আমার মেসেজ (বার্তা) হচ্ছে, আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব, ভোট দেবো। আমাদের তানোরের গর্ব, তানোরের অহংকার ওমর ফারুক চৌধুরী। তার প্রতীকেই কিন্তু আমরা ভোট দেবো।’ বিএনপির নেতার এমন বক্তব্যে তখন থেকেই রাজশাহীজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এ ছাড়া গত ১৯ অক্টোবর রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার চত্বরে আরেক ঘটনা ঘটনান মোজাম্মেল হক। ওই দিন এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হন তিনি। সেখানে তাকে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে দেন এই আসনের বর্তমান এমপি ও নৌকার প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। ওই সময় গুজব ওঠে, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন।

তবে ওই সময় মোজাম্মেল হক খান বলেন, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী তাকে খুবই স্নেহ করেন। সেজন্যই মালাটা পরিয়ে দিয়েছেন। এটি রাজনৈতিক কোনো ব্যাপার নয়। ওমর ফারুক চৌধুরীও তখন বলেছিলেন, সেটি রাজনৈতিক মালা ছিল না।

সারাবাংলা/টিআর

বিএনপি নেতা বিএনপি নেতা বহিষ্কার রাজশাহী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর