নৌকার ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে ব্যবস্থা নেবে ইসি: গোলাম দস্তগীর গাজী
৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৯
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে: নৌকার ক্যাম্পে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রূপগঞ্জ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রূপগঞ্জে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জের দাউদপুরে আমাদের জনসভাকে ভণ্ডুল করতে এবং আমাদের কিছু লোকের নামে মামলা দায়ের করতে এই অপকর্ম করেছে। যারা এসব করছে তাদের সবাই চিনে। এমনকি কারা এই অপকর্ম করেছে মানুষ দেখতে পেরেছে। আমি বলবো এসব করে নৌকার বিজয় থামাতে পারবে না। জনগণ উন্নয়ন ও নৌকার পক্ষে আছে এবং থাকবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গতকালের হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ঘটনার সঙ্গে যিনি জড়িত তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ৩৫টি মামলা আছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি একাধিকবার জেলে গিয়েছেন। সব সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা তার চিন্তা ভাবনায় থাকে। এ ধরনের লোকের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করছি না। আমি এ ঘটনায় মোটেও বিচলিত নই। এই এলাকার মানুষ ৭ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ডের জবাব দিবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
একইসঙ্গে নির্বাচনি ক্যাম্প পুরানো, ভোটারদের ভুরিভোজন করানোর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গোলাম দস্তগীর গাজী।
আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে নৌকার ক্যাম্পে আগুন, অভিযোগ ‘মোশা বাহিনী’র বিরুদ্ধে
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত দিনের উন্নয়নের কারণে রূপগঞ্জের মানুষের কাছ থেকে পরিপূর্ণ সাড়া পাচ্ছি। ভোট যত ঘনিয়ে আসছে ততই এ এলাকার জনগণ নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানেই জনগণ ব্যাপক সাড়া দিচ্ছেন। জনগণ নিজ থেকে উন্নয়নের পক্ষে, নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আমি একা এলাকায় যাচ্ছি আর জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নৌকার পক্ষের প্রচারে এগিয়ে আসছেন।’
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘আমি একা একা এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করি। আমি কোনো লোকজন নিয়ে গিয়ে গণসংযোগ করি না। এলাকার সাধারণ জনগণ আমার পক্ষে গণসংযোগ করে থাকেন। জনগণই আমার শক্তি। এ কারণে আমি বিশ্বাস করি, সাধারণ জনগণই আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে এই এলাকার মানুষের সেবা করার সুযোগ দেবেন।’
পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি কোনো ধরনের দুর্নীতি করিনি, সব সময় এই এলাকার মানুষের পাশে থেকেছি, আর শুধু উন্নয়নই করে গেছি। সে কারণে রূপগঞ্জের যেখানেই যাই সেখানেই মানুষের হাসি দেখতে পাই।’
তিনি বলেন, ‘এই এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে এলাকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদরাসা, অবহেলিত, দরিদ্র মানুষের জন্য বাসস্থান ও বিভিন্ন ভাতার (বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা) ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সব সময় এলাকায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সেজন্য এই এলাকার যেখানে যাচ্ছি সেখানেই মানুষ আমাকে বরণ করে নিচ্ছেন। আর শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৭ জানুয়ারি ভোটে উন্নয়নের প্রতীক নৌকার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। আমি আশাবাদী এই এলাকার মানুষ আবারও নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে। ইনশাআল্লাহ।’
এর আগে, গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নির্বাচনি ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নাওরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়ালের দাবি, গতকাল শুক্রবার দিনভর ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া কায়েতপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। গণসংযোগ শেষে তার অনুসারী কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মোশাররফ হোসেন দলবলসহ ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে আগুন দেন।
রূপগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, মোশাররফ হোসেন পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণসহ ৪০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। ‘মোশা বাহিনী’ নামে রূপগঞ্জে তার একটি সক্রিয় বাহিনী রয়েছে। কয়েক মাস আগে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মোশাররফ আলোচনায় আসেন। পরে তিনি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হন। সম্প্রতি জামিনে বের হয়েছেন। এরপর গতকাল শুক্রবার রাতে এই হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস