Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নারায়ণকে সহজেই পার পেতে দেবেন না আকরাম

রেজাউল ইসলাম তুরান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:০০

খুলনা: ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসন। এটি জাতীয় সংসদের ১০৩তম আসন। নির্বাচনে প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর এ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনি প্রচার। নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই প্রচার সরব হচ্ছে। এই আসনে মোট প্রার্থী চার জন। তবে আসনটিতে ব্যালট বাক্সে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের ঈগলের মধ্যে।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ গত ১৫ বছর ধরে এই আসনের সংসদ সদস্য। ২০০০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হেরে যান। পরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে তিনি এই আসনের টানা সংসদ সদস্য। এর মধ্যে ২০১৪-২০১৭ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এই আসনটিতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একবার জাতীয় পার্টি ও একবার জামায়াতে ইসলামী বিজয়ী হয়। এ ছাড়া আসনটি বরাবরই আওয়ামী লীগের দখলে। ফলে এখানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

তবে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পথের কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেন (ঈগল)। তিনি ফুলতলা উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এর আগে ঋণখেলাপির দায়ে রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। পরে উচ্চ আদালত তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন ছাড়াও এই আসনে প্রার্থী রয়েছেন জাতীয় পার্টির (লাঙল) মো. শাহীদ আলম ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির (হাতুড়ি) শেখ সেলিম আকতার।

বিজ্ঞাপন

এই আসনে ১৯৭৩, ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগ, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি, ১৯৯১ সালে ফের আওয়ামী লীগ, ১৯৯৬ সালেও আওয়ামী লীগ, ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামী, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এই আসন থেকে এমন প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চান, যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, সবসময় মানুষের পাশে থাকবেন।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে ডুমুরিয়ার মিকশিমিল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বক্তব্য দেওয়ার সময় হুমকি দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন। তার সেই বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে শেখ আকরাম হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ পার পাবে না। আজকে বলে আসছি- ওই সালাম, কালাম দু’জনকেই। সময় দিয়ে গেলাম তিন দিন। তোর নারান বাবু (নৌকা প্রতীকের প্রার্থী) কেন? তোর বাপও তোকে বাঁচাতে পারবে না। তুই আমার কোনো নেতাকর্মীর গায় হাত দিস, তুই আমাকে চিনিস না, আজকে যেহেতু নির্বাচন করতে আইছি, করছি, সকলে মিলেই করছি, জনগণ যাকে চায়- সেই নির্বাচিত হবে। বাধা সৃষ্টি করে, ভয় দিয়ে। আরে কারে ভয় দিচ্ছিস- দুটো গুলি ফুটলি তো তুই পলাবি।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমার নির্বাচনি এলাকায় বিগত কয়েক বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যার সুফল পাচ্ছে স্থানীয় জনগণ। নেত্রী এবারও আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। জনগণ আমার পাশে আছে। আমি শতভাগ নিশ্চিত, আমিই জয়ী হব।’

ওই বক্তব্যের ব্যাপারে শেখ আকরাম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বলেছি ৭১ সালের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রণাঙ্গনে আমি যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধক্ষেত্রে হাজার হাজার অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে, এই যুদ্ধ পরিচালনা করেছি। এটাও বলেছি, আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছে। যারা ৭১ এর যুদ্ধক্ষেত্রের দাবি করে। তারা সেদিন কোথায় ছিলেন। যদি দুটি গুলি ফুটতো, তাহলে আপনাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যেত না। আমার ওই কথাকে বিকৃত করে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ব্যাপক সাড়া পেয়ে আমি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। এ বিষয়ে আমি শতভাগ আস্থা রাখি।’

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, খুলনা-৫ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৩ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৪৯ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৭০ জন।

সারাবাংলা/পিটিএম

খুলনা-৫ আসন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ শেখ আকরাম হোসেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর