আতশবাজি-ফানুসের বদলে হর্ষধ্বনিতে বর্ষবরণ টিএসসিতে
১ জানুয়ারি ২০২৪ ০১:১১
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য বছর বর্ষবরণের এই ক্ষণে প্রধান অনুষঙ্গ থাকে আতশবাজি ও ফানুস। তবে এবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আতশবাজি-ফানুসের দেখা মেলেনি ঢাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র তথা টিএসসি এলাকায়। কেবল আনন্দধ্বনিতেই নতুন বছরকে শিক্ষার্থীরা স্বাগত জানিয়েছেন।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টিএসসি এলাকার সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য ঘিরে জড়ো হতে থাকেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও অনেকে গিয়ে অবস্থান নেন সেখানে। ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতে ১২টা স্পর্শ করতেই সবাই উল্লাস আর হর্ষধ্বনিতে মেতে ওঠেন। বিদায়ী বছরের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব বন্ধ করে স্বাগত জানান নতুন বছরকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাফাত রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার আতশবাজি-ফানুস ও উচ্চ আওয়াজ ছাড়াই থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা হয়েছে। কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনো উদযাপনই সচেতনতার পরিচায়ক হতে পারে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সচেতন। এ ধরনের উদযাপনই তাদের মানায়।’
গত কিছুদিন ধরেই খ্রিষ্টীয় বর্ষবরণের সঙ্গে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানোর বিষয়টি রয়েছে আলোচনায়। আগের বছরগুলোতে রাজধানীজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে আতশবাজির তীব্র শব্দ নানা বয়সী মানুষের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফানুসের আগুন থেকে অনেক জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ও দগ্ধ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ কারণে বর্ষবরণের রাতে আতশবাজি ও ফানুসের ব্যবহার বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেন অনেকেই। ঢাকা মহানগর পুলিশও এগুলো নিষিদ্ধ করে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, মানুষের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরি হলে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বর্ষবরণের ক্ষণে বন্ধ হয়নি আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো। তবে এদিক থেকে ব্যতিক্রম ছিল ঢাবির টিএসসি। সেখানে ঠিকই জনবিরক্তি উৎপাদনকারী ও ঝুঁকিপূর্ণ এই দুই অনুষঙ্গকে ঢাবি শিক্ষার্থীরা বর্জন করেন।
টিএসসিতে ঢাবির আরেক শিক্ষার্থী তুহিন হোসেন বলেন, বর্ষবরণের এই ধরনের সঙ্গে হয়তো আমরা পরিচিত না। তবে বিষয়টা খুবই ভালো লেগেছে। নতুন বছর সবার জন্যই সুখকর হোক।
এর আগে সন্ধ্যার পর থেকেই ঢাবি ক্যাম্পাসের প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। ক্যাম্পাসে পুলিশের উপস্থিতিও বাড়ানো হয়। সন্ধ্যা নামতেই ক্যাম্পাসে থাকা বিভিন্ন খাবারের দোকানগুলো বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মাইকিং করে বহিরগতদের ক্যাম্পাস ত্যাগের অনুরোধ করতে দেখা গেছে। অন্য দিনগুলোর তুলনায় এদিন সন্ধ্যার পর থেকে টিএসসি ছিল অনেকটাই ফাঁকা। রাত ১০টার পর থেকে ধীরে ধীরে বর্ষবরণের জন্য শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন।
সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর
আতশবাজি খ্রিষ্টীয় নববর্ষ টিএসসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন বছর ফানুস স্বাগত ২০২৪