সকাল-সকাল কেন্দ্রে যাবেন, আপনার ভোট আপনি দেবেন: শেখ হাসিনা
১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২১
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে আপনাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়। আপনারা প্রত্যেক ভোটার পরিবার-পরিজন নিয়ে সকাল-সকাল ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আপনার ভোট আপনি দেবেন। আপনার ভোট আপনি দিয়ে তাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন।
সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কলাবাগান মাঠে নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই নির্বাচনি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন বর্জন করেছে। বর্জন করাটা খুব স্বাভাবিক। ভোট চুরি করতে পারে না, নির্বাচন করবে না। কারণ এর আগে তো ভোট চুরি করে অ্যভস্ত। চুরি করার ভোট দিয়েই তাদের সৃষ্টি। ক্ষমতা চুরি, ক্ষমতা দখল; এ ছাড়া আর কিছু পারে না। সে জন্য ইলেকশন করতে চায় না।’
‘ইলেকশন বানচাল করবে? মানুষের ভোটের অধিকার আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি। সেই অধিকার কেড়ে নেবে নির্বাচন বন্ধ করবে, এতো সাহস তাদের নাই। তারা পারবে না’ বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা।
বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায় এবং সাধারণ মানুষের বাস গাড়ি ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘রেল লাইনের ফিশ প্লেট খুলে দিয়ে রেলে দুর্ঘটনা ঘটায়। যেন দুর্ঘটনা হয়ে মানুষ মারা যায়। তারা মানুষের লাশ চায়। ট্রেনে আগুন দিয়েছে, মা সন্তানেকে ফেলে দেয়নি। সেই মা সন্তানকে বুকে নিয়ে পুড়ে মারা গেছে। এর আগে বাবার সামনে সন্তান পুড়ে মারা যাচ্ছে; এই রকম দৃশ্য বাংলাদেশে ঘটেছে কাদের জন্য? ওই অগ্নিসন্ত্রাসী বিএনপি-জামাায়াতের জন্য।’
‘তাই এদের ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। ওরা এদেশের সর্বনাশ করতে চায়’ বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
দেশের কল্যাণে তার সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করারও চিত্র তুলে ধরেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জনগণের জন্য কাজ করি। আগামী নির্বাচন, এই নির্বাচনে আপনাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে। ওই বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে আপনাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়। আর আপনারা তার জবাব দেবেন কীভাবে? প্রত্যেক ভোটার পরিবার-পরিজন নিয়ে আপনারা সকাল-সকাল ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আপনার ভোট আপনি দিবেন কেউ যেন ঠেকাতে না পারে তাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন। অগ্নিসন্ত্রাসের জবাব দেবেন।’
এরপর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ১৫টি সংসদীয় আসনে নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এই ১৫টা রত্ম আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। যারা আপনাদের সেবা করবে। ঢাকার মানুষের সেবা করবে।’
ঢাকাবাসীকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নৌকা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা। মহাপ্লাবনে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকাই মানুষকে উন্নতি দেয়। এ নৌকাই মানুষকে নিশ্চিত জীবন দেয়। শান্তি দেয়, সমৃদ্ধি দেয়। এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ।’
আগামীতে নৌকায় ভোট দেবেন। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সেই স্মার্ট বাংলাদেশে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যই আজকে নির্বাচন বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
কাজেই এই নির্বাচনে ভোট দিয়ে নৌকার প্রার্থীদের জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকে আপনারা শুধু ভোট দেবেন না, আপনার ভোট আপনি রক্ষা করবেন। আর ওই অগ্নিসন্ত্রাস জঙ্গিবাদী বিএনপি-জামায়াত তাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন।’
ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। বাংলাদেশের তরুণ সমাজ তারুণ্যই হচ্ছে আমাদের অগ্রদূত। কাজেই প্রথম যারা ভোটার তাদের আহ্বান করব নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্কমকর্তা সাবিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে এ জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণের শর্তে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১ জানুয়ারি দুপুর ২টায় ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে নির্বাচনি জনসভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনাপত্তি জ্ঞাপন করা হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-১০ আসনের নৌকার প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/একে