Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরায় ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৫

বাগেরহাট: প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। সোমবার (১ জানুয়ারি) থেকে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে জেলেদের কাঁকড়া ধরার পাস (অনুমতিপত্র) বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনের পশ্চিম ও পূর্বের দুই বিভাগে এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নুরুল করিম জানান, প্রজনন মৌসুমে কাঁকড়া রক্ষা করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, প্রতিবছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—এ দুই মাস কাঁকড়া সুন্দরবনের নদী-খালে ডিম পাড়ে। সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়। এ সময়ে তাই কাঁকড়ার প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এছাড়া কাঁকড়ার যখন ডিম হয়, তখন এদের ধরা খুবই সহজ। এরা ক্ষুধার্ত থাকে। এদের সামনে যে খাবার দেওয়া হয়, তা খাওয়ার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসে। যদি এ সময় কাঁকড়া শিকার না করা হয়, তাহলে পরের বছর বেশি কাঁকড়া উৎপাদন সম্ভব। সুন্দরবনে তাই বনরক্ষকীদের টহল জোরদার করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা সামনে রেখে কয়েক দিন ধরে গহিন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরেছেন উপকূলীয় অঞ্চলের কাঁকড়া ধরার জেলেরা। তবে এই দুই মাস সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা কাঁকড়া ধরার জেলে মহিদুল খাঁন।

তিনি বলেন, বন্ধের দিনগুলোয় তাদের জন্য সরকারি কোনো ভাতার ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে হবে। বন্ধের এই সময়ে সরকারি সহায়তার দাবি তার।

সোনাইলতলা ইউনিয়নের মো. লিটন গাজী বলেন, তার কাঁকড়া ধরার দুই শতাধিক নৌকা সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছে। আর্থিকভাবে সচ্ছল কোনো লোক সুন্দরবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া ধরতে যান না। যারা যান, তারা প্রায় সবাই দরিদ্র। দুই মাস নিষেধাজ্ঞা চলাকালে এই পরিবারগুলোর চলতে কষ্ট হবে।

বিজ্ঞাপন

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি ও ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—এ দুই মাস কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুম হওয়ায় ৫৯ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশ করে কাঁকড়া ধরার অনুমতি বন্ধ রাখে বন বিভাগ।

সারাবাংলা/এনইউ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর