সাংবাদিকরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন: সিটিটিসি প্রধান

ঢাকা: বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে পুলিশের মতো সাংবাদিকরাও ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন বলে মন্তব্য করেছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউতে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সদস্য ও পরিবারের জন্য ফ্রি মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল ক্যাম্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল। স্বাগত বক্তব্য দেন ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্র্যাবের কল্যাণ সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশের কাজ যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, ঠিক ক্রাইম রিপোর্টারদের কাজও ঝুঁকিপূর্ণ। সেই কাজটি কেমন ঝুঁকিপূর্ণ তা গত ২৮ অক্টোবর আমরা সবাই প্রত্যক্ষ করেছি। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছিলেন। তাদের নির্দয়ভাবে পেটানো হয়েছিল। পুলিশের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পুলিশের প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট থাকে। কিন্তু সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে তা নেই। সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় শক্তি মানসিক সাহস, পেশার প্রতি কমিটমেন্ট এবং পেশাগত প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতামূলক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সদস্যের কাজ ঝুঁকিপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘পেশাগত ঝুঁকির পাশাপাশি মানসিক চাপও থাকে সাংবাদিকদের। এজন্য সাংবাদিকদের শারীরিক চেক-আপ জরুরি। সাংবাদিকরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আরও ভালো কিছু আসবে।’

মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, ‘সকালে হয়তো খারাপ লাগা বোধ করছি, তখন মনে করছি ডাক্তার দেখানো উচিত। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে ভালোবোধ করলে তখন আর ডাক্তার দেখানোর কথা মনে থাকে না। অথবা এমন কোনো কাজ তখন সামনে চলে আসে পেশাগত কারণেই ডাক্তারের কাছে আর যাওয়া হয় না। এমন গত বছর আমরা ক্র্যাবের তিনজন সদস্যকে হারিয়েছি, যারা তাৎক্ষণিকভাবে অসুস্থ হয়েছেন, কিন্তু সেই সময়টুকু আর পাওয়া যায়নি, তিনজনই মারা গেছেন। আমরা সাংবাদিকরা শরীরের প্রতি খামখেয়ালি না হয়ে একটু সচেতন থাকা প্রয়োজন। শুধু পেশাগত কাজ করলেই হবে না সবার উচিত নিজের ও পরিবারে প্রতি সচেতন হওয়া।’

ধূমপায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যারা ধূমপান করছেন তারা ধূমপান ছেড়ে দেবেন। এতে করে শরীরের অনেক ছোট-বড় সমস্যা কমে যাবে।’

মামুনূর রশীদ বলেন, ‘সারাদিন রাত পরিশ্রমের কারণে ক্রাইম রিপোর্টাররা স্বাস্থ্য থেকে বিমুখ থাকেন। বড় কোনো অসুস্থতা না হলে ক্রাইম রিপোর্টাররা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। আজকের এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে সাংবাদিকরা উপকৃত হবেন।’

ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকদের পাশে থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগামীতেও আমাদের ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল সব সময় সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাবে।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতাফ হোসেন, ক্র্যাবের সহ-সভাপতি মাসুম মিজান, সিনিয়র সদস্য খায়রুজ্জামান কামাল, সাবেক সভাপতি আবুল হোসেন, সাবেক সভাপতি ইসা হোসেন ইসা, সাবেক সহ-সভাপতি নিত্য গোপাল তুতু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম বাদশা, সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য গোলাম সাত্তার রনি ও ক্র্যাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার ও প্রচারণা সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জসীম উদ্দীনসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান