Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ ভাই-বোনের লড়াইয়ে জমে উঠেছে ঠাকুরগাঁ-২ আসনের ভোট

এমদাদুল ইসলাম ভূট্টো, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৫

ঠাকুরগাঁও: আর মাত্র তিন দিন পরেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কে হবেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য তা নিয়েই চলছে জল্পনা-কল্পনা। হাট-বাজার, চায়ের আড্ডা, পাড়া-মহল্লায় একটাই আলোচনা কে হবেন এই আসনের কাণ্ডারি।

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন। তার বিপরীতে শক্ত অবস্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন আপন চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জুয়েল। তিনি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। ওই পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন তিনি। তার নির্বাচনি প্রতীক ট্রাক।

বিজ্ঞাপন

এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দৌড়ে আরও রয়েছেন- জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি নূরুন নাহার বেগম। তিনি সুজন ও জুয়েলের আপন ফুপাতো বোন। ফলে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দুই ভাই এক বোনের লড়াইয়ে জমে উঠেছে নির্বাচনি প্রচার। পৌষের কনকনে ঠান্ডায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।

এই তিন জনের বাইরে এই আসনে ডাব প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী রিম্পা আক্তার ও সোফা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের।

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মোট প্রার্থী পাঁচ জন। এর মধ্যে প্রচারে সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছেন নৌকার অধ্যক্ষ মাজাহারুল ইসলাম সুজন, স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের আলী আসলাম জুয়েল এবং লাঙ্গল মার্কা নিয়ে নূরুন নাহার বেগম। তিনজনই সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের ছেলে, ভাতিজা ও ভাগ্নি। এর মধ্যে আবার আলী আসলাম জুয়েল এবং নূরুন নাহার বেগমের মধ্যে আরও এক ধরনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আলী আসলাম জুয়েল নূরুন নাহার বেগমের ছোট বোনকে বিয়ে করেছেন।

বিজ্ঞাপন

নৌকার সঙ্গে বিএনপির মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকলেও শক্ত অবস্থানে আছেন আলী আসলাম জুয়েল। ভোটের হিসাব বলছে, এ আসনে দল-মত নির্বিশেষে ভোটাররা যদি ভোট দেয় তাহলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন আলী আসলাম জুয়েল। অপরদিকে, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ভোটাররা যদি ভোট দিতে না আসেন তাহলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন। ভোটের এই জটিল সমীকরণে কে নির্বাচিত হবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন চলছেন দলের নেতাকর্মীদের বড় অংশকে নিয়ে। আর আলী আসলাম জুয়েল দল-মত নির্বিশেষে সর্বজনীন ভাবমূর্তি নিয়ে এগোচ্ছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক পদধারী নেতা নৌকা মার্কার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশ না নিয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র জুয়েলের সঙ্গে।

নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই ভাই ভোটের মাঠে থাকায় তাদের ভেতরের অনেক কথাই এখন জনসন্মুখে বেরিয়ে আসছে। কে ভূমি দস্যুতা করেছেন, কার কতগুলো বাড়ি। একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য নানা কথা তুলে ধরছেন তারা। এর মধ্য দিয়ে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আসলাম জুয়েল সারাবাংলাকে বলেন, ‘যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হব। নৌকা মার্কার প্রার্থীর লোকজন আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে, বিভিন্ন জায়গায় ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রশাসন যদি তৎপর থাকে এবং সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন উপহার দেয় তাহলে আমিই জয়ী হব।’

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘বিপুল ভোটে জিতে এই আসনটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবো।’ স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘এ ধরনের বিষয় আমার জানা নেই। এগুলো মিথ্যাচার। স্বতন্ত্র প্রার্থী ষড়যন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি এখন ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। নির্বাচনে ভোটারদের কাছে যাওয়া বাদ দিয়ে ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত হয়ে গেছেন।’

নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে ঠাকুরগাঁও জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. মাহাবুবুর রহমানকে ফোন দিলে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রাণীশংকৈলের আংশিক উপজেলা নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ সংসদীয় আসন। এই আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৮ হাজার ২৫ জন।

সারাবাংলা/পিটিএম

আলী আসলাম জুয়েল ঠাকুরগাঁও-২ তিন ভাই-বোন নূরুন নাহার বেগম ভোট মাজহারুল ইসলাম সুজন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর