Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌকাকে সমর্থন দিয়ে সরে গেলেন তরীকতের নজিবুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি। তবে সারাদেশে আরও ৪১ আসনে তাদের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে ফুলের মালা প্রতীকে প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক তরীকত ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি। ২০১৪ সালে তিনি একই প্রতীকে এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি নৌকা প্রতীকে জিতেছিলেন। দু’বারই আওয়ামী লীগ তাকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল।

এবারও নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির প্রত্যাশা ছিল, আওয়ামী লীগ আসনটি তার জন্য বরাদ্দ রাখবে এবং তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ নজিবুলের প্রত্যাশা পূরণ না করে ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে ওই আসনে প্রার্থী করেছে। এ নিয়ে নানা দেনদরবারের পরও দলটি তাদের প্রার্থী প্রত্যাহার করেনি।

এছাড়া নজিবুল বশরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল মাইজভাণ্ডারি তার প্রতিষ্ঠা করা নতুন দল ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’ থেকে একতারা প্রতীকে ওই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। সুপ্রিম পার্টির আরও ৮৪ জন প্রার্থী সারাদেশে নির্বাচন করছেন। তিনিও আওয়ামী লীগের কাছে ছাড় প্রত্যাশা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ তার প্রত্যাশাও পূরণ করেনি।

বিজ্ঞাপন

নৌকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন প্রখ্যাত সুফীসাধক মাইজভাণ্ডারির দুই বংশধর। তবে উভয়ই নির্বাচনের মাঠে সমানতালে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু একদিকে নৌকার সনি, অন্যদিকে একতারা’র সাইফুদ্দিনের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন নজিবুল।

এ অবস্থায় নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে নজিবুল বশর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমিসহ তরীকত ফেডারেশনের ৪২ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলাম। সংবিধান রক্ষার এই নির্বাচনে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী আমেজে আমরা আমাদের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে চালিয়ে আসছিলাম। গত ১৮ জানুয়ারি প্রচারণা শুরুর পর থেকে ফটিকছড়িতে আমাদের দলীয় প্রতীক ফুলের মালার সমর্থনে ব্যাপক গণসংযোগ ও পথসভা হয়েছে। ফটিকছড়িবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থনে আমি আবেগাপ্লুত হয়েছি।’

‘কিন্তু ১৪ দলীয় জোট নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে এবং ফটিকছড়ির সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আমি নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।’

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকারের কোনো অসুবিধা হতে পারে, এমন কিছু করতে চাই না। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ফটিকছড়ি আসন থেকে সরে দাঁড়ালাম। তবে দেশের অন্য আসনগুলোতে আমাদের প্রার্থী থাকবে। আমি ফটিকছড়িবাসীর সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’

এ সময় তরীকত ফেডারেশনের নেতা সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভাণ্ডারী, মোহাম্মদ শাহজালাল, আলমগীর আলম, কাজী নিজাম মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি ১৯৯১ সালে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু সংসদ সদস্য থাকাকালীন মাঝপথে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি ত্যাগ করে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন গঠন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে দল নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে ভিড়েন নজিবুল বশর।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর