মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শেষ কর্মদিবসে কেবল হাছান মাহমুদ এসেছিলেন
৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৯
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিন দিন। সে হিসাবে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ছিল সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের শেষ কর্মদিবস। এদিন দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সরকারের এ মেয়াদের শেষ সংবাদ ব্রিফ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কথা বলেন দেশব্যাপী নির্বাচনের তথ্য নিয়ে। তিনি বলেন, দেশে একটি ব্যাপক নির্বাচনি উৎসব তৈরি হয়েছে। দেশের আপামর জনতা নির্বাচনি উৎসবে শামিল হয়েছে এবং দেশজুড়ে নির্বাচনি প্রচারের জোয়ার বইছে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার নির্বাচনি প্রচারের শেষ দিন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ছয়টা পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। দেশজুড়ে প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন। দেশে সুষ্ঠু ও সুন্দর উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে আন্তজার্তিক পরিমণ্ডলও ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সার্কভুক্ত দেশ, ওআইসি এবং অন্যান্য দেশ ও জোট ইতোমধ্যে নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছেন। তারা ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় যেভাবে পাঠিয়েছিল সেভাবে পাঠাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশি পর্যবেক্ষকরাও নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কমিশনের কাছে আবেদন করেছে। এতে নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন দেশের আগ্রহ রয়েছে। এতে প্রমাণ হয় আন্তজার্তিক মহল নির্বাচনটিকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি যে নির্বাচনবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে জনগণ তা প্রত্যাখান করেছে। যে কারণে তারা এখন নির্বাচন প্রতিহত করা থেকে সরে এসে নির্বাচন পরিহারের ডাক দিয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি পিছু হটেছে। জনগণ সাড়া দেওয়ায় বিএনপি পিছু হটেছে। কিন্তু তারা এখন লবিস্ট নিয়োগ করে বিদেশে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিবন্ধ লেখাচ্ছে। কিছু ইহুদি এজেন্ট নিয়োগ করেছে। তাদের দিয়ে আন্তজার্তিক গণমাধ্যমে রিপোর্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে কোনো লাভ হয়নি।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিবন্ধ লিখেছিলেন দেশের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস ম্যানদের সই জাল করে বিবৃতি দিয়েছিল। বাইডেনের উপদেষ্টা দেশে সাজিয়েছিল, যিনি এখন জেলে। অমিত শাহ ফোন করেছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে। বিএনপি শুধু জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখিত একটি দল নয়, তারা একটি জালিয়াতি দলে রূপান্তরিত হয়েছে। তাদের এই নির্বাচনবিরোধী প্রচার ও বক্তব্য অন্তসারশূন্য। জনগণের মধ্যে এগুলোর কোনো আবেদন নেই। দেশে একটি সুষ্ঠু-সুন্দর, অবাধ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহমূলক উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’
নির্বাচন নিয়ে আন্তজার্তিক একটা সংস্থার প্রতিবেদন সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু ঘটছে তা সত্য। তবে তা অন্য দেশের চেয়ে অনেক কম। পাশের দেশ ভারতে যে স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যে মাত্রার সহিংসতা হয় সেগুলোর চেয়েও আমাদের দেশে যা ঘটেছে তা অনেক কম। নির্বাচনে কোন দল অংশ নিল তা মুখ্য নয়, জনগণের অংশগ্রহণ বড় বিষয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও অনেক দল অংশ নেয়নি। অনেক বড় নেতা অংশ নেননি। কিন্তু জনগণ ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছে এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে। জনগণ এবারের নির্বাচনে ব্যাপকভাবে অংশ নিতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্রাসেলসে বসে রিপোর্ট লেখা সহজ। দেশে এসে তারা যদি দেখে যেতেন যে, এখন কী পরিমাণ উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তারা ২০ দিন আগে রিপোর্ট তৈরি করেছে। গত ২০ দিনে দেশের পরিস্থিতি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যারা এই প্রতিবেদন লিখছেন তারা যদি বর্তমান পরিস্থিতি দেখতেন তাহলে প্রতিবেদন নিশ্চয়ই আপডেট করতে হতো।’
শেষ কর্মদিবসে কেবল তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীকেই দেখা গেছে সচিবালয়ে। আর কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীকে দেখা যায়নি। দুপুরের পর উপস্থিতি কম দেখা গেছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও। এমনকি সচিবালয়ে ভিজিটরদের সংখ্যাও ছিল একেবারে কম।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম