সাতক্ষীরা: জেলার সদর উপজেলার ধলবাড়িয়া গ্রামে ছেলে আরিফ বিল্লহকে হত্যার পর ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদকাসক্ত বাবা বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বাবা ইয়াসিন আলীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ভোরে ধলাবাড়িয়া মাঠপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে। আরিফ বিল্লাহ ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বির্দ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। আরিফের মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার চুপড়িয়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে ইয়াছিন আলীর সঙ্গে ১০ বছর আগে রোকেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তিন বছর আগে ধলবাড়িয়া মাঠপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান রোকেয়া। এরপর থেকে একমাত্র সন্তান আরিফ বিল্লাহসহ স্বামীকে নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন তিনি।
রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী মাদকাসক্ত ও অস্ত্র মামলার আসামি। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আমার বিরোধ হতো। গত মঙ্গলবার স্বামী আমাকে মারপিট করলে আরিফকে নিয়ে আমার নানা ধুলিহর গ্রামের ইজ্জত আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নানার বাড়ি থেকে আরিফকে নিয়ে চলে আসে ইয়াছিন। পরে আর মোবাইলে যোগাযোগ হয়নি। শুক্রবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ফোনে খবর পাই, আমাদের বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক স্বজনদের নিয়ে বাড়িতে এসে জানতে পারি, ছেলেকে ঘরের মধ্যে হত্যা করে দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে ঘরে আগুন দিয়েছে ইয়াসিন।’
আরিফ বিল্লাহর দাদী মলুদা খাতুন বলেন, ‘ইয়াছিন তার ছেলেকে হত্যা করে ঘরে আগুন লাগিয়ে তার মামার বাড়ি আগরদাড়িতে চলে যায়। সেখানে সে সামনে যাকে পেয়েছে, তাকে পিটিয়েছে। পরে ইয়াছিনকে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।’
ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোকন আল জামান জানান, আরিফ বিল্লাহ এবার দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইয়াসিন আলীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তিনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, ইয়াছিন আলীকে আটক করা হয়েছে। সম্ভবত তিনি মাদকাসক্ত। থানায় তিনি অসংলগ্ন আচরণ করছেন। ছেলেটির দেহ পুড়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। চেনা যাচ্ছে না, এমন অবস্থা। ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।