ভোট দিতে যাবেন ঢাকার ভোটাররা
৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৬
ঢাকা: ভোটের বাকি আর একদিন। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনি প্রচার শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার (৫ জানুয়ারি)। ১৮ দিনব্যাপী নির্বাচনের প্রচারে সরগরম রাজধানী সকাল থেকেই নীরব। ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য অনেকেই ঢাকা ছাড়ায় রাজধানীও অনেকটাই ফাঁকা।
প্রার্থীরা এতদিন সাধ্যমতো প্রচার চালালেও বিধি মোতাবেক এখন সরাসরি নির্বাচনি প্রচার চালাতে পারবেন না। এ পরিস্থিতিতে কথা হয় ভোটারদের সঙ্গে। তারা জানান, ভোট দিতে যাবেন। তবে ঢাকার বাইরের ভোটার এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেকেই ভোট দিতে যাচ্ছেন না।
রাজধানীর বিভিন্ন বয়সী মানুষের নির্বাচন নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তরুণ ভোটারদের অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছেন। তারা আগ্রহ নিয়েই ভোট দিতে যাবেন। আবার অনেকেই নির্বাচনের দিনে পাওয়া সাধারণ ছুটিটা ঘরে বসেই কাটাবেন। যদিও প্রার্থীদের কেন্দ্রে আনতেই প্রচার চালিয়েছেন সব প্রার্থী।
মোহাম্মদ সেলিম বাস করেন খিলগাঁয়। এবারই প্রথম ভোট দেবেন। আগামীকাল রোববার (৭ জানুয়ারি) ভোট দিতে যাবেন বলে জানান। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে নির্বাচন ও ভোটদানের গুরুত্ব বোঝেন বলেই ভোট দিতে যাবেন বলে জানান তিনি।
৪৫ বছর ধরে সবুজবাগ এলাকায় থাকেন মোছাম্মত ফাতেমা। পেশায় পিঠা বিক্রেতা। জানালেন, সবসময়ই ভোট দেন। আগামী রোববারও ভোট দিতে যাবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বস্তির সবাই আওয়ামী লীগের ভোটার। নৌকা প্রার্থীর লোকজন এসে নিয়ে যায় ভোটের দিন। এবারও নিয়ে যাবে।’
আরেক নারী চায়ের দোকানদার, ২০ বছর ধরে চা বিক্রি করেন শান্তিনগর এলাকায়। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভোট দিতে যাব। সবসময়ই যাই। হরতাল, অবরোধ ও অন্যান্য রাজনৈতিক সহিংসতা নয়, দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি চান ঢাকা-৮ এর এই ভোটার।’
তবে ঢাকার বাইরের ভোটারদের মধ্যে সামর্থ্যবানরা রাজধানী ছাড়লেও দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষদের অনেকেই ঢাকা ছাড়ছেন না। শেরপুরের মো. গোলাম উদ্দীন বাসাবো এলাকায় কলা বিক্রি করেন। এবার ভোট দিতে যাবেন না। তিনি জানান, বাড়ি যেতে-আসতে লাগে ৬০০ টাকা। গত তিনবার ভোট দিতে গিয়ে দেখেন তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। তাই এবার আর টাকা খরচ করে যাবেন না।
জামালপুরের মোহাম্মদ সাদা মিয়া ঢাকায় থাকেন ২৪ বছর ধরে। ১২ বছর ধরে ছিলেন তেজগাঁওয়ে, আর বর্তমানে ১২ বছর ধরে আছেন খিলগাঁও এলাকায়। গতবার ২৪০ টাকা খরচ করে বাড়ি ভোট দিতে গেলেও এবার আর যাচ্ছেন না। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতবার গিয়ে দেখেন তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। তাই এবার ভোট দিতে গ্রামে যাবেন না। এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটও অন্যতম কারণ। ঢাকায় মানুষ কম বের হওয়ায় আয় কমে গেছে। তাই বাড়ি যাওয়ার টাকাও নেই তার।
অন্যদিকে ঢাকার মানুষদের মধ্যে ভোট দিতে যাওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। অনেকেই ঢাকার যে প্রান্তের ভোটার সেখানে আর বাস করেন না। নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি থাকায় ও গণপরিবহণ ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভোট দিতে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তাদের অনেকেই।
সারাবাংলা/আরএফ/এনএস