ভোট কারচুপি-জালিয়াতির প্রমাণ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: সিইসি
৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:০০
ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও জালিয়াতি কঠোরভাবে প্রতিহতের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবীবুল আউয়াল। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শনিবার (৬ জানুয়ারি) তিনি এই আহ্বান জানান।
এ সময় ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটিয়ে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে এসে নাগরিক দায়িত্ব পালনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানান সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে কেন্দ্র বা নির্বাচনি এলাকার ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল প্রকারের নির্বাচনি অনিয়ম-অনাচর প্রতিহত করার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘নির্বাচনের প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতিগত প্রশ্নে মত-বিরোধের কারণে এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সেরকম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। তারপরও ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। সর্বমোট ১৯৭১ জন প্রার্থী ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফলে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক ণয় মর্মে আখ্যায়িত করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘কেবল ভোট শুরুর অপেক্ষা। অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও ভোটার সাধারণকে নির্বাচন বিষয়ক বিধি-বিধান অনুসরণ করতে জবে। নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তাকেও আইন ও বিধি বিধান যথাযথভাবে অনুধারন, প্রতিপালন ও প্রয়োগ করে সততা ও নিষ্ঠার সাথে নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক বিষয়ে আরোপিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, শৈথিল্য, অসততা ও ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবীবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘ঘোষিত হরতাল অবরোধের মধ্যে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে। ট্রেন, যানবাহন, নির্বাচন কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। কারা দায়ী সেটি আমাদের বিবেচন্য নয়। তবে নাশকতা ও সহিংসতার কতিপয় সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তারপরও অলংঘনীয় সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে জনগণকে অনুরোধ করছি, আপনারা সকল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করে মূল্যবান নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।’
ভোট সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘গণমাধ্যম ও নির্বাচক পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা প্রণিধানযোগ্য। তাই দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের সহযোগিতা আমরা একান্তভাবে কামনা করছি।’
সিইসি জানান, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ২৩ হাজার দেশি এবং ২০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক কাজ করবেন।’
সিইসি আশা প্রকাশ করেন, দায়িত্বশীল আচরণ ও আবশ্যক আইনানুগ ভূমিকা পালনের মধ্যদিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ হবে। দেশে ও বহির্বিশ্বে প্রশংসিত ও বিশ্বাসযোগ্য হবে। দেশের জনশাসনে জনগণের প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র সুসংহত হবে। সংসদ, সরকার ও সংবিধানের কাঙ্ক্ষিত ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকবে।
সারাবাংলা/জিএস/একে
জাতীয়-নির্বাচন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভাষণ সিইসি