শান্তি বজায় রাখতে কমনওয়েলথের আহ্বানে নাখোশ বিএনপি
৬ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৫
ঢাকা: ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে কমনওয়েলথ মহাসচিব যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে নাখোশ হয়েছে বিএনপি।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দেওয়া এক বিবৃতিতে নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগে অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক নেতাদের অবদান রাখার আহ্বান জানান কমনওয়েলথের মহাসচিব।
পাল্টা বিবৃতিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কমনওয়েলথ মহাসচিবের এমন আহ্বান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে হতবাক করেছে। তার বক্তব্য বাংলাদেশের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। এটি বাংলাদেশের জনগণের আশা ও আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি, যারা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করে আসছে।’
তিনি বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিবকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশের প্রধান গণতন্ত্রপন্থি রাজনৈতিক দল আসন্ন নির্বাচন বয়কট করেছে। শুধু ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত ডামি/স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং তাদের আশীর্বাদ নিয়ে ভুয়া বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। নির্বাচনের ফল এরই মধ্যেই নির্ধারিত এবং জনগণের কাছে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্য থেকে পছন্দের জনপ্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে ভোটাররা এই একতরফা ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে। শাসকদল এখন ভোটকেন্দ্রে ভোটাদের উপস্থিতি দেখানোর জন্য বিভিন্ন অনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে।’
রিজভী বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসব বিষয় সোস্যাল মিডিয়া এবং খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ভালোভাবে কভার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কমনওয়েলথ সচিবালয় ও পরিদর্শনকারী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘গত তিন মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম এবং নির্বিচারে ব্যাপক গ্রেফতারের মতো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও ভয়ের অবস্থা তৈরি করা হয়েছে। কাল্পনিক অভিযোগে কারাগারে বন্দি রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব ও এর শীর্ষ নেতাসহ ২৭ হাজারের বেশি বিরোধী ভিন্নমতাবলম্বী নেতাকর্মী। পুলিশ হেফাজতে অসংখ্য মানুষ নিহত, নির্যাতন ও মারা গেছেন। এসব বিষয়ের দিকেও কমনওয়েলথ মহাসচিবের দৃষ্টি রাখা উচিত।’
রিজভী বলেন, ‘সমস্ত গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদার যারা আইনের শাসন ও উদার মূল্যবোধে বিশ্বাসী, তারাও বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। এসব কিছু উপেক্ষা করে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ একটি ভুয়া নির্বাচন আয়োজন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কমনওয়েলথের মহাসচিবের বক্তব্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবতাপরিপন্থি। কারণ ৭ জানুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচন জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণার অনুচ্ছেদ ২১-এর কোনো শর্ত পূরণ করে না।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর