Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌকার ঢেউয়ে ভেসে গেল কেটলি, চোখে পড়েনি সোনালি আঁশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৩

রূপগঞ্জ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে প্রচারের প্রথম দিন থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। তিনবারের সংসদ সদস্য হিসেবে নানামুখী উন্নয়নের কারণে স্থানীয়রা বর্তমান সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীকে (বীর প্রতীক) এগিয়ে রাখলেও গণমাধ্যমে বলা হচ্ছিল তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াই হবে এই আসনে। অপর দুই প্রার্থী হিসেবে বলা হচ্ছিল তৃণমূল বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভুঁইয়ার নাম।

বিজ্ঞাপন

তবে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে রূপগঞ্জের ১২৮টি কেন্দ্রের অধিকাংশ স্থানেই দেখা গেছে মূলত দুই প্রার্থীর মাঝেই ছিল ভোটের লড়াই। এজেন্ট থাকলেও ভোটারদের উপস্থিতি তেমন নেই বলে জানান তারা। কেটলি প্রতীকের এজেন্টরা জানান, ভোট সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। তবে ভোটারদের উপস্থিতি যেমনটা আশা করা হয়েছিল তেমনভাবে নেই।

সরেজমিন সকাল ৮টার আগে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া নব‌কিশলয় হাইস্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজে কেন্দ্রে দেখা যায়, এখানে নির্ধারিত সময়ের আগেই পুরুষ ও নারীদের আলাদা আলাদা লাইনে ভোট দিতে এসেছেন ভোটাররা। এসময় তারা নৌকা প্রতীকের ভোটার বলে জানান।

৩ নং ওয়ার্ড থেকে ভোট দিতে এসেছিলেন হালিমা খাতুন নামে ৮৯ বছর বয়সী এক মহিলা। তার মেয়ে শাম্মী খাতুন তাকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।

হালিমা খাতুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিতে এসেছি৷ কারণ বঙ্গবন্ধু আমাদের এখানে পুনর্বাসন করেছিলেন। এরপরে আর কেউ আমাদের খোঁজ নেননি গোলাম দস্তগীর গাজী ২০০৮ সালে নির্বাচনে জেতার পর থেকে আমাদের ভাগ্য পাল্টায়। এই দেশে প্রথমবারের মতো ভোটার হওয়ার সৌভাগ্য পাই। এরপরে তার করা উন্নয়নের কারণে এখন ভালোভাবে বাঁচতে পারছি, চলতে পারছি।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা যতদিন আছেন ততদিন আমরা তার ভোটার। নৌকা ছাড়া অন্য কাউকে ভোট দেই না।’

এই কেন্দ্রে আসা ৮১ বছর বয়সী রহিম মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘নৌকা মার্কার ভোটার আমরা এটি লুকানোর কিছু নাই। সবাই জানে এটা কারণ নৌকা মার্কার কারণেই আমরা ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘অনেক প্রার্থী আসবে আর যাবে, গোলাম দস্তগীর গাজী বাদে অন্য কেউ এই এলাকার উন্নয়ন করতে পারবে না বলেই আমরা বিশ্বাস করি। কারণ তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

এরপর একে একে চনপাড়ার অন্যান্য ভোটকেন্দ্রেও দেখা যায় একই পরিস্থিতি।

কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পূর্বগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়, নগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বরুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই চিত্র দেখা গেছে।

রূপগঞ্জ ইউনিয়নের জাঙ্গীর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুপুর একটার দিকে দেখা যায় প্রায় একই চিত্র। কাঞ্চন ইউনিয়নের কালাদী শাহাজউদ্দীন জামিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে  অবশ্য কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায় এই কেন্দ্রে কেটলি প্রতীর পক্ষে ভোটারদের আধিক্যের বিষয়ে।

এরপর একে একে কাঞ্চন ভারতচন্দ্র বিদ্যালয়, মুড়াপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দেখা যায় নৌকা মার্কার ভোটারদের সরব উপস্থিতি।

দিনের শেষভাগে তারাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তারাব পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে দেখা গেলো নৌকা মার্কা ও কেটলি মার্কার নেতাকর্মীদের সমান অবস্থান।

বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষে স্থানীয়দের সঙ্গে ভোটের পরিস্থিতি জানতে চাইলে রূপসী স্ট্যান্ডের স্থানীয় চায়ের দোকানদার সজল ইসলাম বলেন, ‘আপনারাও কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরেন। আর আমরাও খবর পাই। দিনশেষে দেখবেন ভোটের ফলাফলে নৌকার স্রোতে ভেসেছে কেটলি, চোখে পড়েনি সোনালি আঁশ।’

উল্লেখ্য, এই রিপোর্ট যখন লেখা হচ্ছিল তখনো বেসরকারিভাবে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে কোনো ফলাফল ঘোষণা করা হয় নাই। তবে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের ১২৮ টি কেন্দ্রে অধিকাংশ প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলে নৌকা মার্কার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) ভোটের ব্যাবধানে এগিয়ে থাকার তথ্য জানা গেছে।

সারাবাংলা/এসবি/এনইউ

ইসি গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর