বাগেরহাটে নৌকার ১২ সমর্থকে কুপিয়ে জখম
৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫৮
বাগেরহাট: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাগেরহাট-৩ আসনের (রামপাল- মোংলা) মোংলায় নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারদারের কর্মীরা। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ১২ জন। এর মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকালে পৌর শহরে পৃথক হামলায় তারা আহত হন। এই আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার।
উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন শেখ জানান, গতকাল রাতে মাদুরপাল্টা গ্রামে ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মানবেন্দ্র মল্লিক (৩৫) ও তার ভাই দিজেন্দ্র মল্লিককে (৩৩) দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন ঈগল প্রতীকের সমর্থক সজল ও উজ্জল। এছাড়া একই সময়ে ওই ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামে ঈগলের কর্মীদের হামলায় আহত হন নৌকা প্রতীকের আরেক সমর্থক সুমন শেখ (১৮)। ভোটের দিন কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট থাকায় তাদের উপর হামলা করা হয়।
সোনাইলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হুমায়ুন সরদার জানান, নৌকায় ভোট দেওয়ায় নির্বাচনের পর ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা সোনাইলতা গ্রামের রবিউল শেখ (৪২), জুবায়ের সরদার (২৩), নাজমুল সরদার (২৪), তফিম সরদার (৩৫) ও আজমল সরদারকে (৫৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেন। তারা সবাই নৌকা প্রতীকের সমর্থক।
তিনি আরও বলেন, তাদের উদ্ধার করে গতকাল রোববার রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাজমুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা কবির উদ্দিন ও হুমায়ুন সরদার বলেন, নৌকা জিতেও আমাদের নৌকার সমর্থকরা মার খাচ্ছেন। আমরা জিতলেও শান্ত রয়েছি। কিন্ত ঈগলের লোকজন গায়ে পড়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় আজ সোমবার থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরের শ্রমকল্যাণ সড়ক এলাকায় ঈগল প্রতীকের সমর্থক মো. সাকি’সহ ৫/৬ সংঘবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীকের সমর্থক আ. সালাম মোল্লা, শিউলি, কুলসুম ও ফারুক বয়াতীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীদের লাঠিসোঁটার মারপিটে নৌকার এই চার সমর্থক গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সমর্থকদের উপর একাধিক হামলার ঘটনায় প্রশাসনের আচরণ সন্দেহজনক বলে উল্লেখ করেছেন নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সমর্থকদের ধৈর্য্য ধরতে বলেছি। কিন্তু তারা কতক্ষণ ধৈর্য্য ধরবে, আমি বুঝতে পারছি না। পুলিশকে এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে বলা হলেও তারা সেটি করছেন না।’
এ বিষয়ে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মারামারির ঘটনার অভিযোগের তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/ডিএম/এনএস