Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চরমুগুরিয়া ইকোপার্কের আধুনিকায়নে বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫০

ঢাকা: ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ছে চরমুগুরিয়া ইকোপার্কের আধুনিকায়ন প্রকল্পের। এজন্য ‘মাদারীপুর জেলার আওতায় বিদ্যমান চরমুগুরিয়া ইকো-পার্কের আধুনিকায়ন প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। চার বছরে এটির অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২১.৫১ শতাংশ।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬ কোটি ৯৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবটি নিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিয় হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) এ কে এম ফজলুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পিইসি সভা করে বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করে দেখেছি। এরপর কয়েকটি সুপারিশ দিয়ে আরডিপিপি (সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করে আনতে বলেছি। সেগুলো সংশোধন হয়ে এলে অনুমোদনের পরের ধাপের কাজ শুরু করা হবে।’

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৩১ কোটি ৭৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে এক কোটি টাকা বাড়ানো হয়। এখন দ্বিতীয় সংশোধনীতে এসে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৩৬ কোটি ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে মেয়াদ বাড়ছে এক বছর ৬ মাস অর্থাৎ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জেলা শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে মাদারীপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত চরমুগুরিয়া একটি প্রাচীন বন্দর হিসাবে পরিচিত। চরমগুরিয়ার বিশেষত্ব হলো এখানকার রেসাস বানর। এদেরকে শহুরে বানরও বলা হয়। বিদ্যমান চরমুগুরিয়া ইকোপার্ক আধুনিকায়নের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও পরিবেশের উন্নয়ন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, বানরের আবাসস্থল সৃষ্টি ও উন্নয়ন এবং বিপন্ন আড়াই হাজার বানরের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত, ইকো-ট্যুরিজমের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য চিত্ত বিনোদনের জন্য পরিবেশবান্ধব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করাসহ ইত্যাদি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ৩১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের কথা ছিল। প্রকল্পটি ২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনামন্ত্রী এটি অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে মোট ৩২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের প্রথম সংশোধন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হয়।

প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে আবর্তক ব্যয় হিসাবে আপ্যায়ন খরচ বাবদ ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা, প্রচার ও বিজ্ঞাপন বাবদ ৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, অনিয়মিত শ্রমিক বাবদ ১৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, পেট্রোল অয়েল ও লুব্রিকেন্ট বাবদ ২ লাখ টাকা, বন্যপ্রাণীর খাবার সরবরাহ বাবদ ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা, অন্যান্য মনিহারি বাবদ ৮৫ হাজার টাকা, পরামর্শক সেবা বাবদ ১৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা, সম্মানী ভাতা ৪ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা মেরামত বাবদ ৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

কিন্তু গত ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পিইসি সভায় বলা হয়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের পরামর্শক সেবা বাবদ ব্যয় ১৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অত্যধিক। এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তাই পরামর্শক ব্যয় বাবদ যৌক্তিক পর্যায়ে কমানো যেতে পারে।

সভায় আরও বলা হয়, এই প্রকল্পের প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে ক্রয় পরিকল্পনা যথাযথভাবে প্রণয়ন করা হয়নি। যে সব পণ্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য ইতিমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলোর তারিখগুলো চুক্তি অনুযায়ী যথাযথভাবে আরডিপিপিতে উল্লেখ করা প্রয়োজন।

প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক সেবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০২১ সালের ৩০ জুনে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী কার্য সম্পাদনের শেষ তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২০২৫ সালের ৩০ জুন। যেহেতু প্রকল্পের অনুমোদিত মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরে তাই অনুমোদিত মেয়াদকালের অতিরিক্ত মেয়াদের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সমীচীন নয়। এসব বিষয়ে পিইসি সভায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সারাবাংলা/জেজে/এমও

আধুনিকায়ন চরমুগুরিয়া ইকো পার্ক ব্যয় ও মেয়াদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর