Wednesday 23 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নওগাঁয় জামানত হারালেন সাবেক মন্ত্রীসহ ১৯ প্রার্থী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:১০

ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক

নওগাঁ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতে ১৯ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকও রয়েছেন। এই পাঁচ আসনে মোট ২৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কোনো প্রার্থী যদি মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সেই হিসেবে নওগাঁ-১ আসনের দুইজন প্রার্থী, নওগাঁ-৩ আসনে পাঁচজন, নওগাঁ-৪ আসনে চারজন, নওগাঁ-৫ আসনে দুইজন এবং নওগাঁ-৬ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

নওগাঁ-১ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাধন চন্দ্র মজুমদার নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেকুজ্জামান তোতা ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭২৯ ভোট। এছাড়াও জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রার্থী আকবর আলী পেয়েছেন ৫ হাজার ২৫টি ভোট ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাজেদ আলী পেয়েছেন ২ হাজার ১১৬টি ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৬১ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬। ফলে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওয়ায় দুই প্রার্থী আকবর আলী ও মাজেদ আলীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

নওগাঁ-৩ আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদার পেয়েছেন ৬০ হাজার ৫১টি ভোট। এছাড়াও কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুব-উল মান্নাফ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৩১ ভোট। ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজা আকরাম চৌধুরী পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৮৬ ভোট। জাতীয় পাটির মাসুদ রানা লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৪১ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিনুর রহমার ওরফে চিকন আলী কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৭০১ ভোট। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সোহেল কবির সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯৭ ভেট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৯০৬ জন। ভোট পড়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬৭৭। তাই এ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট না পাওযায় পাঁচজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

নওগাঁ-৪ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এখানে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাহিদ মোর্শেদকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা পেয়েছেন ৮৫ হাজার ১৮০ ভোট, আর নাহিদ মোর্শেদ পেয়েছেন ৬২ হাজার ১৩২ ভোট। এছাড়াও কয়েকবারে সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক এবার নৌকা প্রতীক না পেয়ে ঈগল মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ১১ হাজার ১৯০ ভোট। ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ (এমএনএ) নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইমাজ উদ্দিন। পরে ১৯৭৩ সালে ১ম সংসদ, ১৯৭৯ সালে ২য় সংসদ, ১৯৮৬ সালে ৩য় সংসদ, ২০০৮ সালে ৯ম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালে বস্ত্র পাটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ইমাজ উদ্দিন ছাড়াও এ আসনের আরও তিন প্রার্থী আফজাল হোসেন (কাঁচি প্রতীক) ৩৭৫ ভোট, আব্দুর রহমান (বাংলাদেশ কংগ্রেস) ৪৬৭ ভোট, আলতাফ হোসেন (জাতীয় পার্টি) ৪৪০ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে মোট ছিলেন ৩ লাখ১৯ হাজার ১৭৫। সেখানে ভেট পড়ে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫ ভোট। সেই হিসেবে সাবেক মন্ত্রী ইমাজ উদ্দিনসহ চারজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

নওগাঁ-৫ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল জন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭১ টি ভেট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৮৪টি ভোট। এছাড়াও অন্য দুই প্রার্থী আজাদ হোসেন মুরাদ (মশাল) পেয়েছেন ৭২৮ ভোট ও ইফতারুল ইসলাম বকুল পেয়েছেন ১ হাজার ৯১৩টি ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৪ জন। ভোট পড়েছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯০ ভোট। এই আসন থেকে দুইজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

নওগাঁ-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আটজন প্রার্থী। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলালকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড. ওমর ফারুক সুমন। ওমর ফারুক সুমন পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭১৭ ভোট আর আনোয়ার হোসেন হেলাল পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭১টি ভোট। এছাড়াও এই আসনে খন্দকার ইন্তেখাব আলম (আম) ১৯৯ ভোট, জাহিদুল (ঈগল) ৩৩১ ভোট, আবু বেলাল হোসেন (লাঙল) ৫৮১ ভোট, নওশের আলী (কাঁচি) ২ হাজার ২৪৩ ভোট, পিকে আব্দুর রব সোনালী আঁশ) ২৮৮ ভোট, ও আব্দুস সাত্তার (ডাব) পেয়েছেন ২০৬ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিলেন ছিল ৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৭৩ জন। ভোট পড়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬০টি। তাই এ আসন থেকে ছয়জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

প্রসঙ্গত, নওগাঁয় ৬টি সংসদীয় আসন হলেও নওগাঁ-২ আসনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থী মারা যাওযায় ওই আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার। পরবর্তীতে ওই আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/এআরপি/এনএস

ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক নওগাঁ নওগাঁ-৪ আসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর