কর্মী-সমর্থকদের মারপিট ও বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আকরামের
৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:১১
খুলনা: ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা ও এজেন্টদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করেছেন খুলনা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার এজেন্ট ছিল সাবিনা বেগম। ভোটের দিন ফলাফল ঘোষণার পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত বৈদ্যের নেতৃত্বে সাবিনার বাড়িয়ে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। তাকে মেরে গুরুতর আহত ও তার দোকনপাটও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া পল্লীশ্রী কলেজ কেন্দ্রে আমার এজেন্ট প্রিয়াংকা মণ্ডল, তার স্বামী প্রকাশ মণ্ডল, তার শ্বশুর ও শাশুড়িকে মারপিট করা হয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরাম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বাদুরগাছায় নয়ন গাজী ও তার স্ত্রী খাদিজা বেগমকে মারপিট করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ভাঙচুর করা হয়। পরে তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা বাড়ি ঘর ছেড়ে রাস্তায় বসবাস করছে। সাহস ইউনিয়নে নোয়াকাঠী গ্রামের নৌকার সমর্থক ইলিয়াস ফকিরের নেতৃত্বে আমার সমর্থক তুহিন শেখ, আদম শেখ ও পল্লী চিকিৎসক ওহিদুল শেখকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। তুহিনের মাথা গুরুতর জখম হয়েছে। ডুমুরিয়া সদরে মির্জাপুর গ্রামে দিবাশীষ মেম্বরের নেতৃত্বে জোর করে ভোট নেওয়ার অভিযোগ আগেই প্রিজাইজিং অফিসারের কাছে করা হয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, ফলাফল ঘোষণার পরে দিবাশীষ মেম্বর, গনেশ বৈরাগী ও আশিষ মহালদারের নেতৃত্বে ওই ওয়ার্ডের আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক স্কুল শিক্ষক শ্যামপদ মণ্ডলের বাড়িতে হামলা করা হয়। মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের শহর আলী, বেতাগ্রামের শহিদুল ইসলাম ও মজিদ গাজীকে মারপিট করে গুরুতর আহত করা হয়। তার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
ওই প্রার্থী অভিযোগ করেন, মাগুরখালী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামে নিতিশ মণ্ডল ও বিমল কৃষ্ণ মণ্ডলের বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুর করেছে। মাগুরাঘোনার মতি মেম্বরের নেতৃত্বে রমজান সরদারকে মারপিট করা হয়েছে। শোভনার গাবতলায় আব্বাস খান, দিনেশ মল্লিক ও তার ছেলে সত্য মল্লিকের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ দের’র নেতৃত্বে হাজিবুনিয়া গ্রামের শম্ভু মণ্ডল, পাপন মণ্ডল ও পেড়িখালী গ্রামের পরিমল বাছাড়কে মারপিট করা হয়েছে। এছাড়া নাম না জানা অনেক নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। বিষয়গুলো ওসি, পুলিশ সুপারকে জানিয়েও সুরাহা হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আকরাম হোসেন বলেন, ‘ফুলতলা উপজেলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। ভোটের আগের দিন মশিয়ালী, দামোদর, ফুলতলা সদর, জামিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বোমা ফাটানো হয়েছে। ডুমুরিয়ার কাঠালতলায় বোমা ফাটানো হয়েছে। এসব আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভোটার উপস্থিতি কমানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সে কারণে আমার পরাজয় ঘটেছে। তারপরেও আমি পরাজয় মেনে নিয়েছি। নির্বাচন পরবর্তী আমার নিরীহ এজেন্ট, কর্মী ও সমর্থকদের ওপর একের পর এক হামলা, বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট অব্যাহত থাকলেও বিজয়ী প্রার্থী তাদের নিবৃত্ত করছেন না। ফলে অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি হামলা, ভাঙচুরে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ১০ হাজার ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরাম হোসেন পেয়েছেন ৯৩ হাজার ভোট।
সারাবাংলা/একে