নির্বাচন কমিশনকে আবু সাইয়িদের ‘চ্যালেঞ্জ’
৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৪১
ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-১ আসনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। ভোটের দিন তার এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া, বের করে দেওয়া, জোর করে ব্যালট পেপার নিয়ে সিল দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি পাবনা-১ আসনের অন্তত ৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আবু সাইয়িদ এ তথ্য জানিয়েছেন। বলেছেন, এসব অভিযোগ জানিয়ে পাবনা-১ আসনের ভোটের ফলাফল স্থগিত রাখা ও গেজেটভুক্ত না করার দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর তিনি আবেদনও করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের ৬৮ নম্বর পাবনা-১ (বেড়ার আংশিক ও সাঁথিয়া) আসনে নির্বাচনের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বিতারণ, ঢুকতে না দেওয়া, ভোটের আগের রাতে এজেন্টদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে অন্যত্র আটকে রাখা, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের রক্তাক্ত করে বের করে দেওয়া, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে জোর করে ঢুকে ব্যালট পেপার নিয়ে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকানোর মতো ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন- মুক্তিযোদ্ধার কাছে হারলেন সংবিধান প্রণেতা
আবু সাইয়িদ অভিযোগে আরও কবলেন, কোনো কোনো কেন্দ্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাই এজেন্টদের অংশ নিতে দেননি। এ ছাড়া ব্যালট ছিনতাই করে বাক্সে ঢোকানো, ব্যালটের মুড়ি বইয়ে কোনো ভোটারের নম্বর না থাকা এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে দিয়ে আগেই বহু ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে রাখার মতো গুরুতর অনিয়ম করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মের কারণে পাবনা-১ আসনের নির্বাচনে ফলাফল অবিলম্বে স্থগিত রাখা ও গেজেটভুক্ত না করার জন্য এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশনকে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে চাই, যেহেতু এই আসনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়নি, তাই কমপক্ষে ৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল অবিলম্বে বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিইসির কাছে আমি আবেদন করেছি। শুধু এখন নয়, ভোটের শুরু থেকেই নানা ধরনের অনিয়ম আমি তাদের দৃষ্টিগোচর করেছি। এখন পর্যন্ত ১১টি অভিযোগ আমি করেছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগের বিষয়েই কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
পুনর্নির্বাচনের দাবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন থেকে কিছু জানানো হয়েছে কি না— জানতে চাইলে আবু সাইয়িদ বলেন, ‘না। এই আবেদন সম্পর্কেও তারা কিছুই জানায়নি।’
নির্বাচন কমিশন অভিযোগ আমলে না নিলে কী করবেন— এ প্রশ্নের জবাবে পাবনা-১ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষের মানুষ। এখানে (পাবনা-১আসনের নির্বাচন) যে অনিয়ম হয়েছে, সেগুলোর প্রতিকার আমি চাই। আমি এসবের বিরুদ্ধে আমার লড়াই অব্যাহত রাখব।’
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রোববার রাতে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৩১৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ট্রাক প্রতীকে পান ৭২ হাজার ৩৮৭ ভোট।
এরই মধ্যে এই নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন।
সারাবাংলা/টিআর
অধ্যাপক আবু সাইয়িদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাবনা-১ বেড়া-সাঁথিয়া ভোটে অনিয়ম শামসুল হক টুকু সিইসি